কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনার সংক্রমণে সারাবিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, দিশেহারা উন্নত উন্নয়নশীল অনুন্নত সব রকম দেশের মানুষ, তখন দক্ষ হাতে ভাইরাস মোকাবেলায় নির্দেশনা দিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে এখনও টিকাদান কর্মসূচী শুরুই করতে পারেনি সেখানে টিকা প্রাপ্তির নানা অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ৪ কোটি টিকা প্রদানের মাইলফলক ছুঁয়েছে। আর পুরোটাই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে। তাই তার ৭৫ তম জন্মদিনকে স্মরণীয় করতে এক কঠোর চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষ ক্যাম্পেনের মাধ্যমে সারাদেশে ৭৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার কর্মযজ্ঞ হাতে নেয়া হয়েছে। আজ সারাদেশে সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়নে দিনব্যাপী বিশেষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেন অনুষ্ঠিত হবে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে এ টিকাদান ক্যাম্পেন। পাশাপাশি সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর (ইপিআই) আওতাধীন পরিচালিত টিকাদান কার্যক্রমও চলবে। গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়েদের ছাড়া ২৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়স্করা জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিকাকার্ড সঙ্গে নিয়ে এলেই পাবেন করোনাভাইরাসের টিকা। অগ্রাধিকার পাবেন বয়স্ক নারী ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীরা।
এ বিষয়ে সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার পরও টিকাদানের সঙ্গে জড়িতরা কেন্দ্রে আরও এক ঘণ্টা অবস্থান করবেন। এ কর্মসূচীতে ২৫ বছর বা তার চেয়ে অধিক বয়স্ক যারা, আগে থেকে নিবন্ধন করেছেন তাদের ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে টিকা নিতে বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সবার সঙ্গে সমন্বয় করে এ গণটিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ইউনিয়ন-উপজেলা ও পৌরসভার প্রতিটি কেন্দ্রে ৫০০ ডোজ বা তার বেশি এবং সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতিটি কেন্দ্রে এক হাজার বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক ডোজ টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই ক্যাম্পেন শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। ক্যাম্পেনে শুধুমাত্র প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হবে। পরবর্তী মাসে একইভাবে ক্যাম্পেনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। ক্যাম্পেনের আগে রেজিস্ট্রেশনকৃত ২৫ বছর বয়োষোর্ধ নাগরিকদের এসএমএস প্রদানের মাধ্যমে অবহিত করে কেন্দ্রে ডাকা হবে। ক্যাম্পেন শুরুর প্রথম ২ ঘণ্টা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাষোর্ধ বয়স্ক নাগরিক, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য এনআইডি কার্ড ও টিকা কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। ক্যাম্পেনে গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের টিকা প্রদান করা হবে না।
তবে একদিনে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ নাও হতে পারে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর শামসুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, লক্ষ্যপূরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এমন কিছু এলাকা আছে যেগুলো প্রত্যন্ত। এদের আমরা বলি ‘হার্ড টু রিচ’ এলাকা। এসব এলাকায় হয়তো (আজই) টিকা পৌঁছানো সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে পরবর্তী দুই একদিনের মধ্যেই এসব এলাকায় টিকা পৌঁছে যাবে।