শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচন জমে উঠেছে, দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

9

পিন্টু দেবনাথ মৌলভীবাজার থেকে :
আগামী ৭ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ততই বাড়ছে। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ধরনা দিয়ে ভোটের আশায় নানা ধরনের আশ্বাস দিচ্ছেন। এদিকে প্রশাসনের তরফ থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ১১৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ১৮ হাজার ১৯৫ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭২১ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৮০টি। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে মোট ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. আলমগীর হোসেন প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করেন। প্রতীক পাওয়ার পর পরই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ভানু লাল রায় দলীয় প্রতীক (নৌকা), জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক (লাঙ্গল) মো. মিজানুর রব, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রেমসাগর হাজরা প্রতীক (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আফজল হক প্রতীক (ঘোড়া) মার্কা। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থী ও প্রার্থীর সমর্থকরা প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা জুড়ে এখন নির্বাচনী আমেজ। মাইক লাগিয়ে বিভিন্ন ধরেন সংগীত পরিবেশন করে ভোটারদের আকর্ষণ করছেন। সারা উপজেলা জুড়ে বিল বোর্ড, সাইনবোর্ড ও পোষ্টারে ছেয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা। এই উপজেলায় জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী নৌকা মার্কার প্রার্থীই বিজয় লাভ করেন। বিগত শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের রনধীর কুমার রায় বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। রনধীর কুমার রায় প্রয়াত হলে নির্বাচন কমিশন উপ-নির্বাচনের ঘোষণা করে। এই নির্বাচনে ১০ জন প্রার্থী আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন। সর্বপরি শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন (দেখুন-৩)
পরিষদের চেয়ারম্যান ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক ভানুলাল রায় আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পান। ভানুলাল রায় টানা শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের প্রথমে সদস্য ছিলেন, পরে পর পর দুইবার চেয়ারম্যান হন। এখন তিনি উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন উপজেলাবাসী আগামী ৭ অক্টোবর উপ-নির্বাচনে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনরায় বিজয়ী করবেন। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদ্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রেম সাগর হাজরা দলীয় প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তিনি আশাবাদী জনগণ ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করবেন। তাঁর সমর্থকরা মনে করেন চা বাগানের সন্তান হিসাবে জনগণ তাঁকে মূল্যায়ন করবে। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আফজল হক (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে বলে সমর্থকরা মনে করছেন। তিনিও আশাবাদী বিজয়ী হবেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে মো. মিজানুর রব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি শ্রীমঙ্গলবাসীর উন্নয়নে সকলের কাছে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য আহবান জানান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে মূলত নৌকা ও আনারস প্রার্থীর মধ্যেই লড়াই হবে। দ্বি-মুখী এই লড়াইয়ে কে হবেন বিজয়ী আগামী ৭ অক্টোবর জনগণ নির্ধারণ করবে এমনটাই আশা করছেন সমাজের সচেতন মহল। এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার লক্ষে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।