২৩ বছর পাকিস্তানের জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে, বারবার মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অধিকারবঞ্চিত বাঙালীর স্বাধীনতা এনেছিলেন বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সারাবিশ্বে তাঁর পরিচিতি ছিল শোষিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর কন্যা এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায়। চার চারবারের প্রধানমন্ত্রী। মানবিক মনোভাবের কারণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এখন বিশ্বে একটি বহুল পরিচিত ও আলোচিত নাম। এক কঠিন সংগ্রামের পথ বেয়ে তিনি আজ স্বপ্রতিভায় স্বমহিমায় বিকশিত সারা বিশ্বে। পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। ৪০ বছর ধরে একটানা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে থাকা, পরপর চারবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এবং এখনও প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা সত্যিই গর্বিত হওয়ার মতো। পিতার মতো দুর্জয় সাহস নিয়ে দেশের রাজনীতি ও জনগণের পক্ষে নিজের সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। জীবনের সমূহ ঝুঁকি নিয়ে নিরন্তর এগিয়ে চলেছেন।
তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বহুবার। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাও হয়েছে। তবে বেঁচে গেছেন তিনি অলৌকিকভাবে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ঘাতকের ঘৃণ্য অপতৎপরতা সফল হয়নি। তার চারদিকে এখনও পরাক্রান্ত বহু শত্রু। যুদ্ধের ময়দানে তিনি একাই লড়ছেন মাথা উঁচু করে। সাম্রাজ্যবাদের কাছে নত হওয়া, স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ এবং দেশ ও জনগণের বিপদের মুহূর্তে দেশত্যাগ বা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার কোন ঘটনা নেই তার জীবনে। তাই তো ভূগোলের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশ্ব ভাবনাকে সামনে রেখে বক্তব্য রাখতেও পিছপা হন না কখনও। বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদ, দ্বন্দ্ব, হানাহানি, সংঘাত-সংঘর্ষ, বারুদের বিস্ফোরণের বিপরীতে শান্তির বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে যে জঙ্গীবাদের বিস্তার তা নির্মূলে তিনি সর্বদা সোচ্চার। দেশের সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের তিনি দমন করছেন। শেখ হাসিনা আজ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যে কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের জন্য রোল মডেল।
তার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট. মেট্রোরেলসহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় দৃশ্যমান হচ্ছে আমূল পরিবর্তন। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের জন্য সর্বশেষ জাতিসংঘের এসডিজি পুরস্কারসহ অর্জন করেছেন ৩৮টির বেশি এ্যাওয়ার্ড ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে হয়েছেন মাদার অব হিউম্যানিটি- মানবতার জননী।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জন্মদিন। ৭৫ বছরে পদার্পণ করলেন তিনি। শেখ হাসিনার মধ্যে সহজ-সরল মহত্ত্ব রয়েছে, যা সকলের শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা আকর্ষণ করে। সমগ্র জাতিকে নিষ্ক্রিয়তা, নির্জীবতা, বিমূঢ়তা থেকে মুক্ত করার জন্য দীর্ঘ লড়াই অব্যাহত রেখেছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ ও বাঙালীর প্রতীক। একই সঙ্গে বিশ্বেরও। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের মূল নায়ক শেখ হাসিনা বিশ্ব রাষ্ট্রনায়কোচিত অভিধার দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাবেন- এই প্রত্যাশা জন্মদিনে।