স্টাফ রিপোর্টার :
বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ন্যায্য ১০টি দাবি বাস্তবায়ন চেয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদ। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ এই অরাজনৈতিক জনসংগঠনের নেতৃবৃন্দ শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানান। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নেতৃবৃন্দ জানান, বর্তমানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা ও গ্যাস সংক্রান্ত দাবি এবং সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের দাবি জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন চান তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জামাল উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে জামাল উদ্দিন যে দাবিগুলো তুলে ধরনে সেগুলো হল- শিক্ষাক্ষেত্রে বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় ১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এছাড়া জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে কারিগরি কলেজ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাস্তবায়ন দরকার। কোম্পানীগঞ্জ ডিগ্রি কলেঞ্জ ও জৈন্তিয়া ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ ও প্রতিটি উপজেলায় একটি মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা ও সরকারিকরণ। ৪টি উপজেলার সকল নন এমপিও প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তিকরণ। শতাব্দীর পর শতাব্দী সাবেক জৈন্তিয়া রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী মহাল সামিল জলকর পূর্বের ন্যায় ভোগ দখলের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল বিশ্বরোডকে ৬ লেনে রূপান্তর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা। সিলেট-তামাবিল সিলেট-ভোলাগঞ্জ সিলেট লোভা রেল লাইন বাস্তবায়ন। গোয়াইনঘাট উপজেলার হাদারপার বাজার হতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত, আনফরের ভাঙ্গায় ব্রিজ নির্মাণসহ আর সি সি মহাসড়ক নির্মাণ। সালুটিকর গোয়াইনসাট গাংকিনারী রাস্তা মটরেবল প্রয়োজন। জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের চতুল লালাখাল রাস্তার চামটি হতে নয়াখেল দক্ষিণ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে আলী বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ। লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম হয়ে সরুখেল পূর্ব পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ। দরবস্ত- কানাইঘাট-গাছবাড়ী-শাহবাগ রাস্তাকে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণ। সালুটিকর গোয়াইনঘাট টু জাফলং পর্যন্ত রাস্তা আঞ্চলিক মহাসড়কে রূপান্তর। রাধানগর হাদারপার জি সি সি আর রোবে ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নে হাদারপার প্রান্তে ( হাদারপার-গােরাগ্রাম) পিয়াইন নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ ও রাস্তা মটরেবল । পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে পরগনা বাজার টু লাটি রাস্তায় অলির খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ। তোয়াকুল মুন্সি বাজার রাস্তা ব্রীজসহ মটারেবল। রুস্তমপুর ইউনিয়নে হাদারপার পাতলিকোন রাস্তা ও পীরের বাজার গুজার কান্দি টু মনোরপাড় রাস্তা মটারেবল ও ব্রীজসহ পাকাকরণ। এছাড়া বৃহত্তর জৈন্তিয়ার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে সংযোগ প্রদান। গাছবাড়ী ও পশ্চিম গোয়াইনঘাট উপজেলা বাস্তবায়ন । বৃহত্তর জৈন্তিয়া নিয়ে জৈন্তিয়া জেলা বাস্তবায়ন । পিয়াইন নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন, সারি, গােয়াইন, ধলাই, সুরমা নদী সহ সকল নদীকে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে পানির নাব্যতা বৃদ্ধি করে নদীপথ সচল ও সকল নদী ভাঙন রােধ ও নদীর তীর সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। বালু পাথর ও গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কারখানা ও ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে বেকারত্ব দূরীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ । সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা সহ সকল প্রতিষ্ঠান, সিলেট গ্যাস ফিল্ড, কোম্পানীগঞ্জ হাইটেক পার্ক, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২সহ সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার প্রদান। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার সকল পাথর মহাল সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের সুযোগ প্রদান করে শ্রমিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। সিলেট গ্যাস ফিল্ডে অস্থায়ী চাকুরীজীবিদের চাকুরী অনতিবিলম্বে স্থায়ীকরণ । বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় সকল পর্যটন কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর। পুরাকীর্তি সংরক্ষণ; জৈন্তিয়ার রাজবাড়ী, মেঘালিক পাথর সহ সকল পুরাকীর্তি যথাযথ সংরক্ষণ এবং জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরকে পৌরসভায় রুপান্তর । এসব দাবি বাস্তবায়নে নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি এটিএম বদরুল ইসলামের, সহ-সভাপতি এড. হাসান আহমদ, শামসুল আলম, এড. মামুনুর রশীদ, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, অধ্যাপক সালাহ উদ্দিন বেলাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. আব্দুল আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাণু লাল দাস, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় আইণজীবী পরিষদের সদস্য সচিব এড. মো. আব্দুল্লাহ, পরিষদের গোয়াইনঘাট উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফুর রহমান, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের সভাপতি মো. মাহফুজুল কিবরিয়া ও সহসভাপতি মো. এমদাদুল হক।