স্টাফ রিপোর্টার :
মহামারি করোনাভাইরাসের কারনে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশনা মেনে সারাদেশের ন্যায় গতকাল রবিবার সিলেট নগরীতেও খুলে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলায় সকাল থেকে আগের মতো বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আবারও প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছে।
নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সরকারি কিন্ডার গার্টেন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিঘাট সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নিদিষ্ট সময়ে গেইট খোলা হয়। গতকালকের দিনটা যেন আনন্দে কাটে, সেজন্য সাজানো হয় স্কুলের ফটক। বেলুন আর দেয়ালে নানা নতুন রঙ দিয়ে সাজানো হয় শ্রেণিকগুলো। এছাড়া সারিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের ব্যান্ড পার্টির বাদ্য যন্ত্রের সুরে বরণ করা হয় শিক্ষাথীদের। এতে যেন প্রাণের মেলা বসেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কলকাকলীতে মুখর হয়ে উঠে তাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান।
প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করানো হয়। আর এতোদিন পর স্কুলে আসতে পেরে আনন্দের যেন কোন কমতি নেই শিক্ষার্থীদের। অভিভাবকদের মধ্যেও উচ্ছ্বাসের শেষ নেই।
সকাল ৮টার দিকে নগরীর অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে স্কুলে এসেছেন। স্কুলের ফটকে হ্যান্ড স্যানিটাইজ ও তাপমাত্রা মেপে এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে সারিবদ্ধভাবে বিদ্যালয়ের ভেতর শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো হচ্ছে। এ সময় স্কুলের গেটে কোনো জটলা দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের সবাইকে মাস্ক পরতে দেখা গেছে। এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফেরারদিনে স্কুলের ফটক সাজানো হয়েছে নতুন সাজে।
অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, শিক্ষার্থীরা খুবই আনন্দিত। আমরা প্রতিদিন দুটো শ্রেণি খোলা রাখছি। কিন্তু অন্যান্য শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা চলে এসেছে। যদিও আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা খুব আনন্দিত যে আমরা আবার আমাদের কর্মজীবনে ফেরত এসেছি। আমরা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলাম। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা প্রতি বেঞ্চে দুইজন ও পরের বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থীকে বসাচ্ছি। হাত ধোয়াসহ অন্যান্য সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধিমালা স্কুলে মানা হচ্ছে। তারপরও সবারই কমবেশি আতঙ্কে আছে, বলেন তিনি।
জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এক অভিভাবক তার মেয়েকে নিয়ে আসেন সরকারি কিন্ডার গার্টেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবক। বিদ্যালয়ে প্রবেশকৃত শিক্ষার্থীদের ইনফারেড থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপ দিলেন শিক্ষকরা। তখন এক শিক্ষার্থী শরীরের তাপমাত্র ১০১ডিগ্রি। সাথে সাথে অভিভাবককে ডেকে এনে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষকরা। তবে ওই শিক্ষার্থীর নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার চৌধুরী। তিনি বলেন,সকল অভিভাবকদের আগে থেকে আমরা বলে দিয়েছিলাম পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকলে বা শিক্ষার্থী নিজে অসুস্থ হলে বিদ্যালয়ে না আসতে। সকালে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছিল। তখন এক শিক্ষার্থীর তাপমাত্র মেপে দেখা যায় তার শরীরে ১০০ ডিগ্রির উপরের তাপমাত্রা। আমরা তার অভিভাবককে ডেকে বাসা নিয়ে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেই। সেই সাথে বলে দিয়েছি আমাদের একটি চিকিৎসক টিম রয়েছে প্রয়োজন হলে সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেন।