সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে এই দেশ স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। ১৯৭১ সালে পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দেশকে স্বাধীন করতে তিনি দেশের জনগণকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযুদ্ধ করার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে ৯ মাস পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
তিনি আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে যখন পুনর্গঠন করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময় ৭৫’র ১৫ আগষ্ট তাঁকে পরিবার সহ হত্যা করা হয়। আর হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমান, খন্দকার মুস্তাক সহ ৭১’র পরাজিত শক্তি জড়িত ছিল। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে খুন করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে। ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা চেয়ে ছিল বাংলাদেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে। কিন্তু তারা তা করতে পারে নি। বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে দেননি। বিএনপি ক্ষমতায় এলেই গুম, খুন, জ্বালাই, পুড়াও, সন্ত্রাস, বেড়ে যায়। তারা বলেন জনগণের দল হচ্ছে বিএনপি অথচ নির্বাচনে জনগণই তাদের প্রত্যাখন করে। কারণ জনগণ বিএনপিকে ভয়পায়। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা খেয়ে না খেয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাদের অবদান কোনোদিন ভুলার নয়। এইদেশ যতদিন থাকবে ততদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতে হবে। তারা জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে ছিল বলে আজ আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি। আওয়ামীলীগ সরকার যতবার ক্ষমতায় বসে ততবার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা চিন্তা করে তাদের সবধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে সরকার।
গতকাল সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা পরিষদের হলরুমে বাঙালির জাতীয় জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালন উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগরের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবুর সভাপতিত্বে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর আওয়াম লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমিটির কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ও যুগ্ম সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সুলতান আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমিন হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মহানগর ইউনিট কমান্ডের সাবেক ইউনিট কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মন রানা। আরো বক্তব্য রাখেন বীর বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফলিক আহমদ সেলিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নীল কান্ত সিং, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুয়েব আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা জামাল পাশা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা পরিষদের প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থাপিত ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান অতিথি সহ নেতৃবৃন্দ। বীর মুুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক এর কুরআন তেলাওয়াত, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিবেকানন্দ সমাজপতির গীতা পাঠ, সিলেট বৌদ্ধা বিহার আনন্দ ভিক্ষ, ত্রিপিটপাঠ, সিলেট প্রেসবিটারিয়ান চার্চ পবিত্র বাইবেল পাঠ করেন মাদার ডিকন নিঝুম সাংমা। জাতীয় সংগীত ও নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশ করে ললিত মঞ্জুরী নৃত্যদল। বিজ্ঞপ্তি