স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন সিলেট মহানগর নেতৃবৃন্দ।
এক বিবৃতিতে ফেডারেশনের সিলেট মহানগর সভাপতি প্রফেসর ড. আব্দুল আহাদ, সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা লুৎফুর রহমান হুমায়দী, সেক্রেটারী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শাকুর, সহকারী সেক্রেটারী জাহেদুর রহমান চৌধুরী, মোঃ গোলাম রব্বানী ও মোঃ জসীম উদ্দিন বলেন, করোনায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সরকারের অবহেলা ও উদাসীনতায় জাতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। করোনার মহামারী চলাকালে কিছু দিনের জন্য হলেও দেশের অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকান, বাজার, মার্কেট, যানবাহনসহ সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসের কথা বলা হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার বিভিন্ন খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিলেও আগামীর দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষকবৃন্দ এবং লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের দুরবস্থাকে সুকৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করলেও তাদেরকে সরকার তেমন আর্থিক সহযোগিতা করছে না। অন্য দিকে অতিরিক্ত হারে সেশন ফিসহ অন্যান্য ফি, জরিমানা, বেতন আদায় করা হচ্ছে। সরকার যেন শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তামাশা শুরু করেছে।
তারা বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় মনোযোগ ও আগ্রহ হারাচ্ছে। অন্য দিকে শিশু-কিশোরদের মোবাইল এবং ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। তরুণ-যুবকরা অহেতুক অতিরিক্ত সময় ইন্টারনেটে কাটাচ্ছে। বহু শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে এবং ছাত্রত্ব হারাচ্ছে। এতে অনেকের আচরণগত সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক ও মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাদের নিয়মতান্ত্রিক জীবনে অনভ্যস্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে অনেকেই অনৈতিক কার্যকলাপ, নেশা ও উচ্ছৃঙ্খলতায় জড়িয়ে যাচ্ছে। উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিশোর গ্যাং নামক ধ্বংসাত্মক সংস্কৃতির প্রসার ঘটছে। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় উচ্চ শিক্ষিত বেকার শিক্ষার্থীদের বিরাট অংশ চাকরির পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারছেন না। অনেকের চাকুরীর বয়স শেষ হয়ে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। যার ফলে নৈতিক অবক্ষয়সহ দেশ নানামুখী সঙ্কটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষতি ভয়াবহতা সুদূরপ্রসারী তাতে সন্দেহ নেই, যা অভিভাবকদের জন্য সীমাহীন উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
আগামীর সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল কলেজ মাদরাসা সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জোর দাবী জানান।