কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। বলেছেন, ‘চলমান লকডাউন দুই সপ্তাহ অনেক বেশি দিন না। এই দুই সপ্তাহের কারণে আপনি যদি ৫০ বছর বাঁচতে পারেন, তাহলে দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত করবেন কি-না, সেই সিদ্ধান্ত আপনার নিজের।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কর্তৃক লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘কঠোর লকডাউনেও অনেকের বাসায় থাকতে ভালো লাগে না, বিরক্ত লাগে। অনেকেই আবার লকডাউন কেমন হচ্ছে, তা দেখতে বের হচ্ছেন।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘নিজেরা বাইরে বের হয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসুস্থ হবেন। এরপর হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে অ্যাটাক (আক্রমণ) করবেন, এটা ঠিক না। দয়া করে এই কাজগুলো করবেন না। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে রক্ষা করি। দুই সপ্তাহের কারণে আপনি যদি ৫০ বছর বাঁচতে পারেন, তাহলে দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে।’
আইজিপি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা করোনা অতিমারির কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীকে আমরা পরাজিত করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এই দুর্যোগও মোকাবেলা করতে পারবো। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘মানুষের জীবন এবং জীবিকা দুটিই যেন সচল থাকে এজন্য অহর্নিশ কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষকেও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রায় ৪০ লাখ পরিবার বসবাস করে। প্রত্যেক পরিবার থেকে যদি এক প্লেট করেও খাবার দেয়া হয় তাহলে ৪০ লাখ মানুষ খাবার পাবে। করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষগুলো আমাদেরই কমিউনিটির অংশ। তাদেরকে সাথে নিয়েই বাঁচতে হবে।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই মৃত্যুর মিছিল আমরা কি আরও প্রলম্বিত করবো? এ সিদ্ধান্ত আমাদেরকেই নিতে হবে। তাই আসুন, আমরা হাতে হাত ধরে কাজ করি, দুর্যোগ মোকাবেলা করি।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ দেশের সব পর্যায়ের ব্যবসায়ী ও ধনাঢ্য ব্যক্তি যারা সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান আইজিপি।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেকে নিজে বাঁচাতে হবে, কেউ আপনাকে বাঁচাবে না। নিজেকে রক্ষা করতে হবে, নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাহলে আমরা বাঁচতে পারবো।’
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘করোনাকালে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করলে আমরা সবাই ভালো থাকবো। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। দোকান মালিক সমিতি এক হাজার লোকের দায়িত্ব নিয়েছে। এভাবে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ব এখন বিপদের মুখে। বাংলাদেশও এর বাইরে নই। এই যুদ্ধে ধৈর্য ধরে সবাইকে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এক হাজার অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার, নগদ অর্থ, মাস্ক ও সাবান বিতরণ করে।