লকডাউনের চতুর্থ দিন ॥ নগরীতে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ॥ ১২৬ মামলায় ২২৩ যানবাহন আটক, ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা

10

স্টাফ রিপোর্টার :
সরকার ঘোষিত ৭ দিন ব্যাপী কঠোর লকডাউনে অন্যান্য দিনের চেয়ে গতকাল রবিবার চতুর্থ দিনে রাস্তায় মানুষজনের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে লকডাউন কার্যকর করতে মাঠে রয়েছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা। সিলেটে লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় টহল দেয়ার পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর রয়েছে। এছাড়া দিনব্যাপী অভিযানে ১২৬টি মামলায় ২২৩টি যানবাহন আটকের পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৮৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সেই সাথে সিলেটের প্রবেশদ্বার দক্ষিণ সুরমা হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর, বাইপাস সড়ক, কুমারগাঁও তেমুখী, শাহপরাণ গেইট, বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ার পাশাপাশি অনেককে জরিমানা করা হচ্ছে। তবে জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তল্লাশির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যেতে পারছেন। তবে লকডাউনে গত ৩ দিনের যে চিত্র সিলেটে ছিলো চতুর্থ দিনের লকডাউনে সড়কগুলোতে যানবাহন ও জনসমাগম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা আছে, কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। রবিবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। চলমান লকডাউন অমান্য করে প্রথম দিন অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে সিলেট মহানগরীসহ ১৩টি উপজেলায় ৩৩টি মোবাইল টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। এদিকে শনিবার লকডাউনের বিধি নিষেধ অমান্য করায় সিলেট মহানগর পুলিশের অভিযানে সিএনজি অটোরিকশা ৩৩ টি, মোটরসাইকেল ৬০ টি, প্রাইভেট কার ১৭ টি ও অন্যান্য ৯ টি মামলাসহ সর্বমোট ১১৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশা ৫১ টি, মোটরসাইকেল ৮৫ টি, প্রাইভেট কার ৬ টি, অন্যান্য ৭৬ টি সহ ২১৮ টি যানবাহন আটক করা হয়।
অপরদিকে পুলিশি ডিউটিতে সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক লকডাউন বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে ৭৬ হাজার ৩শ’ টাকা জরিমানা আদায় এবং ১ জনকে আটকও করা হয়।
মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দল লকডাউন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টহল পুলিশের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। সেই সাথে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে একাধিক টিম। কেউ লকডাউন না মেনে বাহির হলে তার বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে জরিমানার পাশাপাশি আইনী ব্যবস্থা।
নগরীতে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা: গত ৩ দিনের তুলনায় গতকাল বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানায় মানুষের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। রবিবার সকাল থেকে সড়কে, দোকান পাঠে মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে গত ৩ দিনের তুলনায় গতকাল নানা কাজে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছেন। পুলিশের টহল এড়িয়ে দু’একটি সিএনজি চললেও আর কোন যানবাহন চলতে দেখা যায়নি।
এদিকে, কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে গতকাল রবিবার সিলেটে দিনব্যাপী অভিযানে ১২৬টি মামলায় ২২৩টি যানবাহন আটকের পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৮৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গত তিনদিনের তুলনায় গতকাল সিলেটে তুলনামুলক বেশি মানুষের সমাগম দেখা গেছে। তবে যারা কারণ ছাড়া বের হয়েছেন প্রশাসনের নজরে পড়ার সাথে সাথে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখী হতে হয়েছে।