গড় আয়ু বেড়েছে

12

দু’বছর ধরে চলমান করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিকালেও মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে দুই মাস শীর্ষক সংবাদটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় দেশের জনসংখ্যার বিস্তারিত তথ্য। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ। ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখ। গত ৬ মাসে জনসংখ্যা বেড়েছে আরও ৯ লাখ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আগের বছরের ১ দশমিক ৩২ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশে। বর্তমানে দেশে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার। নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৪০ লাখ ৩০ হাজার। পুরুষ ও নারীর অনুপাতে ভারসাম্য বিরাজমান। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭২ বছর ৮ মাস। পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭১ বছর দুই মাস এবং নারীর ৭৪ বছর ৫ মাস। ইতোপূর্বে তা ছিল ৭২ বছর ৬ মাস। শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২১ শিশু অপরিবর্তিত থাকলেও মাতৃমৃত্যুর হার একটু উন্নতি হয়ে প্রতি হাজারে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৩ জনে। ৭ বছর ও তদুর্ধ জনসংখ্যার শিক্ষার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ। পরিকল্পনামন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী জনসংখ্যা তথা মানুষ দেশের সম্পদ- মানব সম্পদ।
করোনা মহামারীর ভয়ঙ্কর ছোবলও সম্ভবত কাবু করতে পারেনি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশ একটানা ৬৬ দিন এবং পরে ধাপে ধাপে লকডাউনে থাকলেও সার্বিক জাতীয় অর্থনীতিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।
সরকারের সেই স্বপ্নের পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলোর বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১-এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে। উল্লেখ্য, এর আগে সরকার রূপকল্প-২১ ঘোষণা করেছিল, যার সুফল দেশ ও জাতি পেতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মানুষের মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ু বেড়েছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫-এর ওপরে। বিদ্যুত উৎপাদনে দেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। মুজিববর্ষে বাংলার ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার রয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রসহ দশটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। সৌদি আরব, জাপান, ইউএইসহ বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতায় প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা- ২০২১-এর সাফল্যের পর সরকার এবার অগ্রসর হচ্ছে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে। ইতোমধ্যে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। করোনা সঙ্কটে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আশাব্যঞ্জক গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রফতানি আয় ও রেমিটেন্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে ডাবল ডিজিট জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করা অসম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে জনসংখ্যা বিবেচিত হতে পারে সম্পদ হিসেবে।