৪০ লক্ষ টাকার ফেক্টর ইনজেকশন হস্তান্তর ॥ ওসমানীতে হিমোফিলিয়া রোগীদের টেস্ট ও চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির আহবান

8
হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রদত্ত ফেক্টর ইনজেকশন গ্রহণ করছেন হাসপাতালের উপ পরিচালক।

রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত রোগ হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সিলেটে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হিমোফিলিয়া রোগীদের জন্যে ফেক্টর নামের প্রয়োজনীয় ইনজেকশনটি বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। আগে সিলেটে হাতে গোনা দুয়েকটি ফার্মেসি ছাড়া অন্য কোথাও এই রোগের ইনজেকশন পাওয়া যেত না এবং অনেকসময় রোগীদেরকে চড়া দামে কিনতে হতো। ১৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ফেক্টর ইনজেকশন প্রদান করায় রোগীদের জন্যে এ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সেমিনার কক্ষে হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে ফেক্টর ইনজেকশন হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়ের সভাপতিত্বে ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজিস্ট ডা. মো. নজমুল ইসলামের পরিচালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তার শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. যোগেন্দ্র সিনহা, রক্ত সঞ্চালন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. এফ এম, এ মো. চৌধুরী, শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামসুর রহমান, জুনিয়র কনসালটেন্ট হেমাটোলজিস্ট ডা. নবেন্দ্রু চৌধুরী, হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম, হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ সিলেট চ্যাপ্টার-এর আহবায়ক মো. মুহিত মিয়া, যুগ্ম আহবায়ক মো. আলমগীর আলম, আহবায়ক কমিটির সদস্য রুবেল আহমদ, অন্নদা রঞ্জন দাস, আহমদ আল আরিফ, আঙ্গুর মিয়া, জুনাইদ আহমদ, অভিভাবক সদস্য আতিক মিয়া প্রমুখ।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তার শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ওসমানী হাসপাতালে হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য এখন থেকে ৬টি বেড নির্ধারিত থাকবে। ফলে তাদের পক্ষে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ সহজ হবে।
হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে বক্তব্যকালে বক্তারা বলেন, হিমোফিলিয়া একটি রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত রোগ, সাধারণত বংশানুক্রমে পুরুষদের এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের প্রধান সমস্যা হলো রক্ত জমাট না বাঁধা, ফলে শরীরের কোথাও কেটে গেলে রক্তক্ষরণ সহজে বন্ধ হয় না। কিন্তু সিলেটে এই রোগের কোন টেস্টের ব্যবস্থা নেই। তারা সিলেটে হিমোফিলিয়া টেস্টের ব্যবস্থা গ্রহণ ও ট্রিটমেন্টে বোর্ড গঠন করে সপ্তাহে ১দিন হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, এই রোগে আক্রান্তদেরকে চিহ্নিত করার জন্যে সামাজিকভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে, যারা টেস্টের মাধ্যমে রোগী হিসেবে চিহ্নিত হবেন, তাদেরকে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে হবে। হিমোফিলিয়া রোগের টেস্ট কিট অত্যন্ত ব্যয়বহুল তাই হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ হিমোফিলিয়া সহযোগিতায় সিলেটে এই টেস্টের ব্যবস্থা করার আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি