সাম্প্রতিককালে সাইবার অপরাধীদের ভয়ঙ্কর অস্ত্র হয়ে উঠেছে ফেসবুক। ভুয়া এ্যাকাউন্টস বা আইডি খুলে অপরাধ সংঘটিত করে চলেছে সাইবার অপরাধীরা। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক বিরোধ, প্রেমের ফাঁদে ফেলা, প্রেম নিবেদন, প্রেম প্রত্যাখ্যান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফেসবুকে অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও নারী-কিশোরীরা। সহিংস উগ্রবাদ, গুজব, রাজনৈতিক অপপ্রচার, মিথ্যা সংবাদ, গ্যাং কালচার, পর্নোগ্রাফি, সাইবার বুলিং, জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, পাইরেসি, আসক্তি এর সবই হচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে, যার প্রধান ও অন্যতম বাহন ফেসবুক।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারকারীর অজান্তেই তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অর্থাৎ সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি বাড়ছে। শাঁখের করাতের মতো বিষয়টি। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে এ খাতে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়ছে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এক্ষেত্রে গ্রাহকের দিক থেকে এসব ঝুঁকির পথ তৈরি হওয়ার প্রবণতাই বেশি। তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা কম থাকা, এ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার হালনাগাদ না রাখা, পাইরেটেড সফটওয়্যারের ব্যবহার এ ঝুঁকিগুলোর অন্যতম কারণ।
সাইবার হুমকিতে স্বাভাবিকভাবেই আর্থিক খাতগুলো অন্যতম বড় লক্ষ্য থাকে। এরপর আছে সরকারের সংবেদনশীল অবকাঠামো, স্বাস্থ্য খাত, ই-কমার্সের সাইট, অর্থ লেনদেনের মোবাইল এ্যাপ, জনপ্রিয় সাইট। গ্রাহক পর্যায় থেকে তথ্য বেহাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অসচেতনতা, সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে না জানার কারণে নিজের অজান্তেই গ্রাহকের তথ্য নানা জায়গায় চলে যায়। সাইবার হামলা মোকাবেলায় যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিগত মজবুত নিরাপত্তা অবকাঠামো গড়ে তুলতে ব্যাপকভিত্তিক কর্মসূচী গ্রহণ করা আবশ্যক। শুধু প্রতিষ্ঠানের নয়, ব্যক্তি পর্যায়েও ডিজিটাল ডিভাইস, যেমন কম্পিউটার, স্মার্টফোন এসব ব্যবহারে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া সার্বক্ষণিকভাবে ফেসবুক মনিটরিংয়ের জন্য বড় টিম গঠন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।