বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের সন্ধিক্ষণে রাজধানীসহ দেশের জনজীবন যখন তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ ও বিপর্যস্ত, তখন মঙ্গলবার সারাদেশে প্রবহমান ঝড়-ঝঞ্ঝা-বৃষ্টিপাত নিয়ে এসেছে পরম স্বস্তির সুবাতাস। আকস্মিক এই ঝড় ও বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ছিল মুহুর্মুহু বজ্রপাতও, যাতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় দেশে গত কয়েক বছরে বজ্রপাতের উৎপাত-উপদ্রব বেড়েছে, যাতে অনাকাঙ্কিষত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে দেশব্যাপী তাল গাছ রোপণের কথা বলা হলেও তাতে যে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে তা বলা যাবে না। আকস্মিক এই ঝড়-বৃষ্টি তাপপ্রবাহ কিছুটা কমালেও সবাইকে মনে করে দিয়েছে, বর্ষা মৌসুম আসন্ন। মাত্র একদিনের কয়েক ঘণ্টার মাঝারি বর্ষণেই রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। লকডাউনের কারণে গণপরিবহনের সঙ্কট থাকায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে এতে। রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরী নজরদারির সময় এসেছে সিটি মেয়রদ্বয়ের। ঢাকার খালগুলো পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এবার। মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপও বাঞ্ছনীয়। স্বস্তির কথা এই যে ঝড়-বৃষ্টি বজ্রপাতে জীবনহানিসহ আম-কাঁঠাল-লিচুর কিছুর ক্ষতি হলেও অধিকাংশ জমির ফসল তথা বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে তা উঠে গেছে কৃষকের গোলায়। এখন জরুরী প্রয়োজন উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো অবিলম্বে মেরামত ও সংস্কার করা।
জ্যৈষ্ঠের প্রথমেই প্রথম কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির দর্শন মিলেছে রাজধানীবাসীর। গ্রীষ্মের শেষ এক অপরাহ্নে আকাশ নিঝুম কাজল কালো হয়ে নেমে আসে বৃষ্টি। প্রতীয়মান হয়, দিনের আলো নিভে গেল। এমনিতেই প্রবল ধূলি-ধূসরিত রাজধানীর রাস্তাঘাট, বিবর্ণ-বিশীর্ণ গাছগাছালি। আকস্মিক ধূলি ঝড়ে যা হয়ে পড়ে প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন। বিশাল বিশাল অট্টালিকার সারি, সুউচ্চ সুশোভিত টাওয়ারসমূহ প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়। সঘন সজল নিবিড় আকাশে মাঝে মধ্যেই ঝলসে উঠে বিজলি ও বজ্রপাতের ঝিলিক। আসন্ন বর্ষা মৌসুম সম্পর্কে এখন সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিতে হবে বর্ষা ও বন্যা মোকাবেলার যথাযথ প্রস্তুতি। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্যকে সার্বিকভাবে প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে সর্বদাই। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিবাচক সাফল্য রয়েছে।