কাজিরবাজার ডেস্ক :
মিয়ানমারের জান্তাকে ক্ষমতা থেকে বহিষ্কারের লক্ষ্যে আত্মগোপনে কাজ করা একটি ‘সংসদ’ নতুন একটি ছায়া সরকারের নাম ঘোষণা করেছে। আটক হওয়া নেত্রী অং সান সু চিকে প্রধান হিসেবে রেখে এই সরকারে জাতিগত সংখ্যালঘু রাজনীতিবিদদেরও রাখা হয়েছে।
দ্য কমিটি রিপ্রেজেন্টিং পিড্যাংসু লুটাও (সিআরপিএইচ) নামে মিয়ানমারের আইনপ্রণেতাদের এক গোষ্ঠী একটি ছায়া সংসদ পরিচালনা করে আসছে। এর অধিকাংশ সদস্যই অং সান সু চির রাজনৈতিক দলের। শুক্রবার গোষ্ঠীটি তাদের সরকারের নেতাদের নাম ঘোষণা করে।
‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ নামে এই সরকারের নামকরণ করা হয়েছে। এতে স্টেট কাউন্সেলর হিসেবে অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে উইন মিন্টকে রাখা হয়েছে। অন্যান্য নেতাদের মতো উইন মিন্টকেও জান্তা সরকার গৃহবন্দী করে রেখেছে।
সিআরপিএইচ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রখ্যাত গণতান্ত্রিক নেতা মিন কো নাইং বলেছেন, এই ছায়া সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক সংখ্যালঘু কোচিন নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এক সংখ্যালঘু কারেন নেতাকে পদ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি সরকার গঠন করেছি যেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্যরা রয়েছেন।’
মন্ত্রীদের তালিকায় দেখা যায় চিন, শানি, মন, কারেন্নি ও তাং গোষ্ঠীর নেতারা রয়েছেন।
মিন কো নাইং বলেন, ২০২০ সালের নির্বাচনের ভিত্তিতে, দেশব্যাপী অভ্যুত্থান-বিরোধী আন্দোলন ও সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠী থেকে রাজনীতিবিদদের পছন্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এটির শেকড় থেকে উপরে ফেলতে হবে, এটি বিনাশে আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে।’ তিন আঙ্গুলের প্রতিবাদী প্রতীক দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র জনগণই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।’
জান্তা সরকার জানিয়েছে, সিআরপিএইচ এর সঙ্গে জড়িত যে কেউ ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অপরাধ করছে। এছাড়া শত শত খ্যাতনামা রাজনৈতিক কর্মী ও রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সামরিক সরকার। এদের মধ্যে কেউ কেউ নতুন ছায়া সরকারের বিভিন্ন পদে রয়েছেন।
ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে মিয়ানমারে। সামরিক অভ্যত্থানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের সাধারণ জনতা। বিক্ষোভ দমনে সরকার অত্যন্ত নিষ্ঠুর উপায় অবলম্বন করছে। এ পর্যন্ত সাতশোরও বেশি বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
বিক্ষোভকারীরা দেশটির সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীগুলোকে নেতৃত্বের ভূমিকায় আসার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে। সংখ্যাগুরু বামারদের কারণে এই ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলো অনেক দিন ধরেই প্রান্তিক অবস্থানে চলে গিয়েছিল।