কাজিরবাজার ডেস্ক :
চারদিকে এমনিতেই ছিলো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। মাত্র ২৮ দিন আগে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে হানা দিয়েছে প্রাণনাশী ভাইরাস করোনা (কোভিড-১৯)। কখন যেন দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত সিলেটের সীমানায় ঢুকে পড়ে এই ভাইরাস- এমন আতঙ্কে যখন সিলেটবাসী দিশেহারা, ঠিক তখন সকল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে সত্যি করে এ অঞ্চলে হানা দিলো কোভিড-১৯।
গত বছরের (২০২০ সালের) ৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সে সময়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন।
খবরটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে পুরো সিলেটে। পুরো সিলেটের মানুষের মাজে এক বছর আগের এই ৫ এপ্রিলের কালোসন্ধ্যা ছড়িয়ে দেয় এক অজানা আতঙ্ক। সেই আতঙ্কের মাঝে থাকা অবস্থায়ই ১০ দিন পর ১৫ এপ্রিল সিলেটের প্রথম করোনা রোগী ডা. মঈন উদ্দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
ডা. মঈনের শরীরে করোনা শনাক্তের পর ওই রাতেই নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকাস্থ তাঁর বাসা লকডাউন করে দেয় প্রশাসন। পরদিন (৬ এপ্রিল) পুরো হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন করা হয়।
এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে ৭ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে তাকে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে (সদর হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়। ৮ এপ্রিল উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডা. মঈনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৩ এপ্রিল তাকে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। এর দুদিন পর (১৫ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ওই হাসপাতালে তিনি মারা যান।
সোমবার (৫ এপ্রিল) করোনার বছরের পূর্ণ করলো সিলেট। এই এক বছরে অন্ধকার নেমে এসেছে ২৯২টি পরিবারে। এক বছরে এই ২৯২টি পরিবারে ভয়ঙ্কর ভাইরাস করোনা কেড়ে নিয়েছে কারো জন্মদাতা মা-বাবা, কারো জীবনসঙ্গী-সঙ্গীনি, আবার কারো কলিজার টুকরো ছেলে-মেয়ে।