কাজিরবাজার ডেস্ক :
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কোনোক্রমেই প্লাস্টিক লেমিনেটেড পোস্টার, ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। যেসব প্রার্থীরা এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আগামী ১১ এপ্রিল দেশের ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা জারি করেছে সংস্থাটি। যা সোমবার (১৫ মার্চ) মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারণা চালানো যাবে না। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২৫ মার্চ। এক্ষেত্রে ওইদিন থেকেই প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় যেতে পারবেন।
এদিকে, প্রচারণার ক্ষেত্রে পথসভা এবং ঘরোয়া সভা ছাড়া যেকোনো প্রকার শোভাযাত্রা বা মিছিল-মশাল মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পথসভা বা ঘরোয়া করতে হলেও স্থান এবং সময় উল্লেখ করে পুলিশ প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টা আগে অবহিত করতে হবে। আবার জনগণের চলাচলে অসুবিধা হয় এমন কোনো স্থানে পথসভা বা পথসভার জন্য মঞ্চ তৈরি করা যাবে না।
অন্যদিকে, প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কেউ সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সরকারি সার্কিট হাউজ, রেস্ট হাউজ বা ডাকবাংলো ব্যবহার করতে বা অবস্থান করতে পারবেন না।
প্রার্থী তার সাদা-কালো পোস্টার বা লিফলেটে নিজের ছবি ও প্রতীক ব্যতিত অন্য কারো ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে দলীয় প্রার্থী হলে কেবল দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই মিছিলে নেতৃত্বদান বা প্রার্থনারত অবস্থার ছবি ব্যবহার করা যাবে না। পোস্টার, লিফলেট দেওয়াল বা যানবাহনের লাগানো যাবে না, ঝুলিয়ে প্রচারণা চালানো যাবে। কোনোক্রমেই প্লাস্টিক লেমিনেটেড পোস্টার, ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না।
প্রতীক হিসেবে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। প্রতীকের আকার হতে হবে ৩ মিটারের মধ্যে। প্রার্থীরা নির্বাচনী পথসভা বা প্রচারের কাজে কেবল একটি মাইক বা উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন দুপুর ২টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত।
নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার মোটরযান ব্যবহার করে মিছিল বা শোডাউন করে প্রচারণা চালানো যাবে না। ধর্মীয় উপসনালয়ে প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।
চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প হবে ৩টি, সদস্য পদের প্রার্থীরা একটির বেশি ক্যাম্প করতে পারবেন না। ক্যাম্পে টিভি, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। বন্ধ রাখতে হবে দেওয়াল লিখনও। তোরণ নির্মাণ, ঘের, প্যান্ডেল বা ক্যাম্প স্থাপন এবং আলোকসজ্জা করাও নিষেধ।
এসব নিষেধাজ্ঞার কোনোটি না মানলে দশ হাজার টাকা জরিমানার করার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধ প্রমাণ হলে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পরও প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রাখে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী, ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৮ মার্চ, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৯ মার্চ।
নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমরা নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এসব বিষয় দেখভাল করবেন। আচরণবিধি কেউ না মানলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লেমিনেটেড পোস্টার, ব্যানারের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণেই আমরা এমন নির্দেশনা দিয়েছি। কাগজ পোড়ালেই অনেক দূষণ হয়, সেখানে প্লাস্টিকের লেমিনেটেড পোস্টার, ব্যানার নষ্ট করার সময় আরও বেশি পরিবেশ দূষণ হয়। এছাড়া প্লাস্টিক মাটির সঙ্গেও সহজে মেশে না। তাই এগুলো নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না।