কাজিরবাজার ডেস্ক :
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থাকা বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ সরাতে কঠোর অবস্থানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এসব উড়োজাহাজ একদিকে বিমানবন্দরের জায়গা ডাম্পিং স্টেশনে পরিণত করেছে, অন্যদিকে এ থেকে কোনও আয়ও হচ্ছে না। তাই জুনের মধ্যে পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ সরাতে বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক।
সূত্র জানায়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক সমন্বয় সভার অকেজো উড়োজাহাজ বিমানবন্দর থেকে সরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় দ্রুত অপসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে বহুদিন ধরে পড়ে থাকা অব্যবহৃত, পুরাতন অকেজো বিমানগুলো অপসারণে কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এগুলো জায়গা দখল করে আছে, কিন্তু কোনও রেভিনিউ পাওয়া যায় না। এছাড়া বিমান চলাচলেও বিঘ্ন সৃষ্ট হচ্ছে ।
শাহজালালের মতো সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে টারমার্ক ও এপ্রোনে রাখা অকেজো উড়োজাহাজগুলো অপসারণ কাজ করতে হবে। সভায় বেবিচক চেয়ারম্যান জুন মাসের মধ্যে ঢাকা ও সিলেটের এ দুই বিমানবন্দরের সকল পুরাতন এয়ারক্রাফট অপসারণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, কয়েকটি এয়ারলাইন্সের ১২টি পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ বিমানবন্দরের রফতানি কার্গো ভিলেজের সামনে দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে ছিল। এরমধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৮টি, জিএমজি এয়ারলাইন্সের ১টি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ২টি, অ্যাভিয়েনা এয়ারলাইন্সের ১টি উড়োজাহাজ আছে। বারবার চিঠি দিয়ে জানানো হলেও পরিত্যক্ত উড়োজাহাজগুলো সরায়নি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো। ২০২০ সালের আগস্টের দিকে কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে সরানো শুরু হয় । সাময়িকভাবে কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে সরিয়ে আরও উত্তর দিকে রাখা হয়। এসব উড়োজাহাজের রেজিস্ট্রেশন কার্যকর থাকায় আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে নিলামে বিক্রি করতেও পারছে না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, বিমানবন্দরে থেকে পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ সরাতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিলামে তুলতে হলে বেবিচকের সহায়তা লাগবে। নিলামের আনুষ্ঠানিকতার জন্যও সময়ের প্রয়োজন আছে। সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা পেলে দ্রুত সময়ে সরানো সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, শাহজালালে পরিত্যক্ত ১২টি উড়োজাহাজের মধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৮টি ও জিএমজি এয়ারলাইন্সের ১টি উড়োজাহাজের ডি-রেজিস্ট্রেশন করেছে বেবিচক। বাকি উড়োজাহাজগুলোর ডি-রেজিস্ট্রেশন হলে নিলামে বাধা থাকবে না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
অন্যদিকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টারমার্ক ও এপ্রোনে কোনও অকেজো উড়োজাহাজ নেই। তবে একটি ফ্লাইং ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানের হ্যাঙ্গারে উড়োজাহাজ রয়েছে। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এই প্রতিষ্ঠানটিকে হ্যাঙ্গার ও উড়োজাহাজ সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছে বিমানবন্দরটির কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে ওসমানী বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, কোনও এয়ারলাইন্সের পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ সিলেটে নেই। তবে একটি প্রশিক্ষণ একাডেমির হ্যাঙ্গার আছে, সেখানে তাদের উড়োজাহাজ আছে। তাদের কার্যক্রম না থাকায় তাদের সরে যাওয়ার জন্য নোটিশও দেওয়া হয়েছে।