কাজিরবাজার ডেস্ক :
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ১১ নিহত হয়েছে। হাসপাতাল এবং রাজনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কয়েক সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভে এটিই সবচেয়ে বড় হতাহতের ঘটনা।
খবরে বলা হয়, নির্বাচিত সরকারি দলীয় নেতা অং সান সুচিকে গ্রেফতারের পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক গোলযোগ চলছে। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। ওই নির্বাচনে সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভুমিধস জয় পায়।
প্রায় ৫০ বছর সামরিক শাসনের পর সর্বশেষ সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের উদীয়মান গণতন্ত্রের পথে যাত্রা থেমে গেল। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির লাখ লাখ সাধারণ মানুষ রাজপথে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। পশ্চিমা বিশ্ব সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নিন্দা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া কয়েকটি দেশ সীমিত পরিসরে সামরিক জান্তা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
রবিবার ইয়াংগুনের বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভে স্টান গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সেসময় সেনা সদস্যদের পুলিশকে উৎসাহ দিতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির প্রথম ক্যাথলিক কার্ডিনাল চার্লস মং বো টুইটারে বলেছেন, ‘মিয়ানমারের অবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রচারকৃত ছবিতে দেখা গেছে, রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন সহকর্মীরা।
মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দাওয়েই, ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয় শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে ১১ নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন মারা যান দাওয়েই শহরে। বাকি দুজন মারা যান অন্য দুই শহরে।
পায় জ হেইন নামের একজন উদ্ধারকর্মী এএফপিকে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরে তিনজন নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে নিহত হন। ২০ জনের মতো আহত হন রাবার বুলেটে। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইয়াংগুনেও বড় বিক্ষোভ হয়েছে। এখানে শিক্ষকদের একটি বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে একজন নারী শিক্ষক নিহত হন। তবে তিনি ঠিক কিভাবে নিহত হয়েছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ইয়াঙ্গুনের উপকণ্ঠের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক অ্যামি কিয়াও (২৯) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমরা বিক্ষোভে নামামাত্র পুলিশ গুলি চালানো শুরু করে। তারা সতর্ক করতে টু শব্দটিও উচ্চারণ করেনি। গুলিতে কয়েকজন আহত হয়। এ অবস্থায় কিছু বিক্ষোভকারী আশপাশে বাড়িঘরে আশ্রয় নেন।