কাজিরবাজার ডেস্ক :
বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা পাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে ‘শিক্ষা আইন-২০২১’ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সর্বময় ক্ষমতা পরিচালনা কমিটির। নিম্ন-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে ম্যানেজিং কমিটি। স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে গভর্নিং বড়ি। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি বেতনের অংশ দেয় সরকার। কিন্তু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে পরিচালনা কমিটি ভেঙে দিতে পারে শিক্ষা বোর্ড। এমপিও স্থগিত, কর্তন বা বাতিল করতে পারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করতে পারে পরিচালনা কমিটি।নতুন শিক্ষা আইনে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করার এখতিয়ার পেতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়লেই নিবন্ধন বাতিল করবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। আর নিবন্ধন বাতিল হলেই চাকরি হারাবেন শিক্ষকরা।
আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়, নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণিত হলে এনটিআরসিএ সরকারের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বাতিল করতে পারবে।
শিক্ষা আইনের খসড়ার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শেখাবেন যে শিক্ষক তিনি নিজেই যদি অনৈতিক কাজ করেন, তাহলে তার শিক্ষকতা করার কোনও যোগ্যতা থাকা উচিত নয়। তাই এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে। নিজস্ব আইনে পরিচালিত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ হলে চাকরি থাকে না, তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা হওয়া উচিত।
আইনের শিক্ষক নির্বাচন অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য শিক্ষক নির্বাচন সম্পন্ন করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ। পদভিত্তিক সকল শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি ও যোগ্যতা আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে। নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণিত হলে এনটিআরসিএ সরকারের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বাতিল করতে পারবে। এনটিআরসিএ নিজস্ব বিধিবিধান দ্বারা পরিচালিত হবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সর্বময় ক্ষমতা পরিচালনা কমিটির। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজৗকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই অবস্থার নিরসন ঘটাতে শিক্ষা আইনে সংশ্লিষ্ট বিধান যুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।