স্টাফ রিপোর্র্টার :
সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু হত্যা মামলার চার্জ গঠন পিছিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজু হত্যা মামলার সকল আসামীরা সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির হলেও অপর অসামী অসুস্থ হয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় চার্জগঠন হয়নি। শুনানী শেষে আদালতের বিচারক চার্জ গঠনের জন্য আগামী ১৮ মার্চ সকল আসামীদের উপস্থিত থাকার জন্য আদেশ দেন। ওইদিন আদালতে চার্জগঠনের কথা রয়েছে। নিহত রাজু মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার শাহাপুরের মো. ফজর আলীর পুত্র। তিনি সিলেট ল’কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট সরওয়ার আহমদ চৌধুরী বলেন, ছাত্রদল নেতা রাজু হত্যা মামলার চার্জ মঙ্গলবার গঠন হওয়ার কথা ছিলো। ওইদিন মামলার আসামী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী অসুস্থ হয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকায় চার্জ গঠন হয়নি। রাজু হত্যা মামলায় দিনার, সলিড, রুবেল আদালতে হাজির করা হয়।
সূত্র জানায়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু হত্যা মামলায় সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রকিবসহ ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ২৮ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক অনুপ চৌধুরী। তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশের ভিত্তিতে আলোচিত এই হত্যা মামলা থেকে শাহিন আহমদ ও কায়েছ আহমদ নামে দুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রদল নেতা আব্দুর রকিব চৌধুরীর নির্দেশে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাজুর শরীরে ৪০টিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে ২৬ জন অংশ নিয়েছে। অভিযোগপত্রে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৫৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। অভিযুক্তরা আগে থেকেই রাজুকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। ফয়জুল হক রাজু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আদালতে ৬ জন জবানবন্দী দিয়েছেন। এর মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ফাহিম আহমেদ তোহা ও সাদ্দাম হোসেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট (১ম আদালত) মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী তাদের জবানবন্দী রেকর্ড করেছেন। দুজনের জাবানবন্দীতে রকিব ও দিনারসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন জাকির হোসেন উজ্জ্বল, সালাউদ্দিন লিটন, মঈনুল করিম ও নজরুল ইসলাম। বিচারক এই ৪ সাক্ষীর জবানবন্দীও রেকর্ড করেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ আগষ্ট রাতে রাজু তার মোটরসাইকেলে করে জাকির হোসেন উজ্জ্বল ও সালাউদ্দিন লিটনকে নিয়ে বাসার যচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় কুমারপাড়ার মেইন রোডে রাইয়ান ফার্মেসির সামনে পৌঁছামাত্র রাজুর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে হামলা চালানো হয়। এসময় গুলিতে জাকির হোসেন উজ্জল আহত হয়। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে গেলে তারা রাজুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা রাজুকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাজুর চাচা দবির আলী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।