কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলেও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্চমারীদের কোনও তথ্য নেই মন্ত্রণালয় বা সরকারের কাছে। জরুরি প্রয়োজনে কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য প্রয়োজন হলে, কিংবা তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের দরকার হলে, তা সংগ্রহে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। সে কারণে স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের ডাটাবেজ তৈরি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ জরুরিভিত্তিতে তথ্য চেয়েছে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব কামরুল হাসান বলেন, ‘নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে কতজন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন, তা আলাদা আলাদাভাবে চাওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে এই ডাটাবেজ করা হবে। ’
বিকাশ, রকেট ও নগদ নম্বরসহ তথ্য চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনও শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকার ভবিষ্যতে যদি কোনও প্রণোদনা দিতে চায়, তাহলে তাৎক্ষণিক এসব সংগ্রহ করার প্রয়োজন হবে না। ডাটাবেজে সব থাকবে ভবিষ্যতের জন্য।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারিকালে শিক্ষক-কর্মচারীদের অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য তথ্য চাওয়া হয়েছিল।কিন্তু সেই তথ্য সংগ্রহ করতে অনেক সময় লেগে যায়। শুধু তাই নয়, জরুরিভিত্তিতে শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ব্যবহার করে শিক্ষকদের অর্থ সহায়তা দেওয়া হলেও প্রায় ৫ হাজার শিক্ষক অর্থ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ তুলে ধরে গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। এসব কারণে যদি কখনও শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সংগ্রহ করা এই তথ্য ব্যবহার করতে পারবে মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে তথ্য হালনাগাদ করাও সহজ হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জানা গেছে, দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন এডুকেশন ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন (ইআইআইএন) নম্বরধারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের নারী ও পুরুষের অনুপাত সুনির্দিষ্টভাবে জানা নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে। এছাড়া তদন্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে এই তথ্য সহজে ব্যবহার করা যাবে।
নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে আলাদাভাবে কতজন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন, তাও জানা যাবে এই ছকে চাওয়া তথ্যে।
শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি,জন্ম তারিখ, যোগদানের তারিখ টেম্পারিংসহ অন্যান্য অবৈধ কাজের অভিযোগ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করলে নাম সংশোধন করার আবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে জমা পড়ে। এসব নানা কারণে শিক্ষকদের ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা প্রশাসকদের এ তথ্য চেয়েছে। জানা গেছে, জেলা প্রশাসকদের কাছে কয়েক দফা তথ্য চাওয়া হলেও হালনাগাদ তথ্য পায়নি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
বৃহস্পতিবারের অফিস আদেশে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন এডুকেশন ইনস্টিটিউশন আইডেন্টিফিকেশন (ইআইআইএন) রয়েছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের হালনাগাদ তথ্য জরুরিভিত্তিতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু বার বার চাওয়া হলেও দেশের জেলাগুলো থেকে হালনাগাদ তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ‘ইআইআইএন’ধারী নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে হালনাগাদ তথ্য সংযুক্ত করে নির্ধারিত ছকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এক্সেল এবং পিডিএফ ফাইল করে (ফংসঢ়ড়@সড়বফঁ.মড়া.নফ) ইমেইলে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো।
নির্ধারিত ছকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা/থানার নাম, ইআইআইএন নম্বর, প্রতিষ্ঠানের নাম নন-এমপিও শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, তাদের পদবি, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর, বিকাশ/রকেট/নগদ নম্বর পাঠাতে হবে। নারী ও পুরুষের সংখ্যাও নির্ধারিত ছকে আলাদাভাবে পূরণ করতে বলা হয়েছে।