করোনার দীর্ঘ ছুটিতে লেখা পড়ার আগ্রহ হারাচ্ছে হাওরপারের হাজারো শিক্ষার্থী

33

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
ইস্কুল বন্ধ পত্তি দিন পড়া শিখবার চাপ নাই, ইস্কুল খোলা থাকলে পত্তি দিন পড়া শিইক্ষ্যা ইস্কুলও যাওন লাগে,এখন পড়া মনে রাখবার লাইগ্যা মাঝে মাঝে পড়াত বই ।
তাহিরপুর সদর উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিউটি আক্তর সে এভাবেই এ প্রতিবেদকের সাথে স্থানীয় ভাষায় কথা গুলো বলছিলো। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ালেখার জন্য তার কোন চাপ নেই। স্কুল খোলা থাকলে প্রতিদিন পড়া শিখে স্কুলে যেতে হয়। মুখস্থ যা কিছু আছে তা যেনো ভুলে না যায় সে জন্য মাঝে মধ্যে পড়তে বসে।
শুধু শিক্ষার্থী বিউটি নয়। এ চিত্র হাওর পারের প্রতিটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পড়ালেখা শেখার স্থান শুধু বিদ্যালয়। বিদ্যালয় কেন্দ্রিক লেখা পড়া শেখে অনেক শিক্ষার্থী। বাড়িতে লেখাপড়া হয়না বললইে চলে। বছরের শুরুতে বিশ^ব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার কারনে গত মার্চ মাসের ১৮ তারিখ হতে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা হয়। যা এখনো চলমান রয়েছে। অপরদিকে বাড়িতেও পাঠে মনযোগী হচ্ছে না অনেক শিক্ষার্থী। যে শিক্ষার্থীর অভিভাবক সচেতন রয়েছেন তারা তাদের ছেলে মেয়েদের বাড়িতে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। করোনার জন্য বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচী বিভিন্ন মাধ্যমে চলমান রাখা হলেও হাওর পারের শিশুদের ঘরে ঘরে সে সুবিধা না থাকায় তাও কাজে আসছেনা তাদের। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় হাওর পারের অধিকাংশ শিশুদের দেখা হচ্ছে না বই খাতায়। এতে করে লেখা পড়া ভুলেই যাচ্ছে কেউ কেউ। এমনটাই মনে করেন এলাকার ছাত্র অভিভাবক।
শ্রীপুর(দক্ষিন) ইউনিয়ন মহালিয়া হাওর পারের গ্রাম দূর্লভপুর। গ্রামের ছাত্র অভিভাবক সফিক মিয়া তিনি বলেন, গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে চায় না, জোর করে তাদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে হয়। অনেকদিন ধরে বিদ্যায়ল বন্ধ থাকায় শিশুরা আনন্দেই আছে। তাদের পড়ালেখা করতে হচ্ছে না।
পাতারগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার রায় বলেন, হাওরপারের গ্রামাঞ্চলের অনেক শিশুরা বিভিন্ন কারণে বাড়িতে লেখাপড়া করে না। বিদ্যালয়ে যতক্ষন উপস্থিত থাকে ততক্ষনে যা শিখে। দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনেক শিশুরা যা শিখেছে তাও ভুলে যাওয়ার পথে।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, হাওর পারের শিশুরা এমনিতেই বিদ্যালয় বিমুখ। করোনার কারণে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ। বাড়িতে বসে সকল শিক্ষার্থী নিয়মিত লেখাপড়া করে না। এতে করে দিনে দিনে শেখার আগ্রহটা হারিয়ে ফেলছে হাওরপারের প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।