বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে – প্রধানমন্ত্রী

11
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বিভাগীয় কমিশনার মো: মশিউর রহমান এনডিসি।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক উত্তরোত্তর আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক।’ পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ বৈঠকের আগে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমাঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৭ ডিসেম্বর তার জন্য বিশেষ দিন। বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হলেও তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্েযর সঙ্গে বন্দি ছিলেন। তার মা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বোন শেখ রেহানা, ভাই শেখ রাসেল এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ১৭ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। সেদিন এক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা (কর্ণেল অশোক) এসে তাদের মুক্ত করায় তাকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আগামী বছর বাংলাদেশ ৫০ বছরে পা দিতে যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও ৫০ বছরে পড়ছে। বাংলাদেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করছে। এদেশে কিছুদিন আগে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশতবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সেজন্য একটি বিশেষ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবাষিকী উপলক্ষেও দুই দেশ স্মারক ডাকটিকিট উদ্বোধন করলো।’
দুই দেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদেশের অনেক মানুষ ভারতে বেড়াতে যায়, চিকিৎসা করাতে যায়। আবার ভারতের কিছু মানুষ এদেশে কাজ করে। তারা রেমিট্যান্স পাঠায়। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যমান সহযোগিতামূলক ঐকমত্েযর সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতি বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিকভাবে আরও সংহত করতে পারে। দুই দেশের চলমান উদ্যোগগুলো এতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।’
বর্তমান বিশ্ব মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানবজাতি কীভাবে অজানা শত্রুকে মোকাবিলা করে তার পরীক্ষা নিচ্ছে কোভিড-১৯। এ ভাইরাস মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।’ তিনি কোভিড মোকাবিলায় ভারতের স্বাস্থ্য প্যাকেজের পাশাপাশি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের বিভিন্ন প্যাকেজের প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ভারতের গৃহীত নীতিমালার মাধ্যমে দেশটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একইসঙ্গে এদেশে কোভিড মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্যাকেজ এবং সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায়ও যথেষ্ট প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
১৯৭১ সালে এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র স্মরণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে আগামী বছরজুড়ে যৌথ কর্মসূচি পালনে পালনে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় আপনার উপস্থিতি আমাদের যৌথ উদযাপনের গৌরবময় স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখবে।’