বিজয়ের মাস

46

জেড এম শামসুল :
আজ ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থান হানাদারমুক্ত হয়। এদিন বগুড়ার ক্যান্টনমেন্ট দখলমুক্ত হয় এবং পাকিস্তানী ডিভিশন ও ব্রিগেড সহ প্রায় ১৭শ হানাদার সদস্যদের আত্মসমর্পণ করে। এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অব্যাহত গেরিলা ও বিমান হামলায় হানাদার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। সিলেটের পাহাড়ী এলাকা বালুচর ও খাদিমনগরের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী অবস্থান নেয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা মাইকিং করে হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান জানালে হানাদার বাহিনী এ আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সালুটিকরের দিকে পালাতে থাকে। এদিনই মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী শহরে প্রবেশ করে। এদিন মুক্তিযুদ্ধের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এর বেসামরিক উপদেষ্টা তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য দেওয়ান ফরিদ গাজী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অধিনায়ক কর্ণেল বাগচি শহরে প্রবেশ করেন। সিলেটের হানাদার বাহিনী তার দোসররা রাজাকার-আলবদর- আলশামসরা সালুটিকরে জমায়েত হয় এবং সিলেট শহরে স্বাধীনতাকামী মানুষের সভা-সমাবেশে শহর মুখরিত হয়ে উঠে। এদিন রাজধানী ঢাকা উদ্ধারে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী গেরিলা হামলা সহ বিমান হামলা চালায়। এদিন ড: আলীমের বাড়ীতে আশ্রিত মাওলানা মন্নান, ড: আলীমকে ধরিয়ে দেয় এবং ড: আলীমের দুচোখ উপড়ে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই দিনে ঢাকার আকাশে মিত্রবাহিনী বোমারু বিমান বেলা ১১টায় গভর্ণর হাউসে ডা: মালিকের মন্ত্রী পরিষদ সামরিক বেসামরিক উপদেষ্টাদের বৈঠকের সময় বোমা বর্ষণ করে। এদিন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মানেকশ পাকিস্তানী হানাদারদের আত্মসমর্পণের জন্যে শেষ বারের মত নির্দেশ প্রদান করেন। জেনারেল মানেকশ তার শেষ নির্দেশে বলেন আমি আবার বলছি আর প্রতিরোধ করা নিরর্থক। ঢাকা এখন সম্পন্ন রূপে আমাদের কামানের আওতায়। এদিনই অব্যাহত হামলায় হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।