কবির আল মাহমুদ স্পেন থেকে :
ইউরোপের রাজনীতিতে বাংলাদেশী প্রবাসীদের অবস্থান ভালো ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে! ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, নরওয়েতে আছে বেশ কয়েক বছরের আধিপত্য। এরই মধ্যে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে বাংলাদেশীদের রয়েছে শক্ত অবস্থান। এছাড়া নরওয়ের পার্লামেন্টে বেশ কয়েক বছর ধরে আছেন একজন বাংলাদেশী প্রবাসী সংসদ সদস্য।
ইউরোপের অত্যন্ত সমাজতন্ত্রবাদী ও রক্ষণশীল রাজনৈতিক কাঠামোর দেশ স্পেন। আয়তনের বিচারে রাশিয়া, ইউক্রেন ও ফ্রান্সের পরে স্পেন ইউরোপের ৪র্থ বৃহত্তম দেশ।
উদার গণতন্ত্র ব্যবস্থার বিশ্বে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসীরা প্রবেশ করছেন রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে ! তারপরও অনেকগুলো দেশ বিদেশী অভিবাসীদের সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারে না, তার মধ্যে স্পেন অন্যতম।
স্পেনে প্রায় চল্লিশ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী বাস করে।নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক আগ্রহের কারণে স্পেনের রাজধানী শহর মাদ্রিদ ও পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় আছে বাংলাদেশী মূলধারার রাজনৈতিক সংগঠন। বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, রাজনৈতিক কমিটি আছে বেশ সরব অবস্থায়। কিন্তু স্পেনের মূল ধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের অবস্থান খুবই নাজুক। অথচ বর্তমানে প্রায় বেশ কয়েক হাজার স্প্যানিশ পাসপোর্টধারী রয়েছেন যারা দেশটির মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা লাভের সক্ষমতা রয়েছে।
স্পেনের মূল ধারার অন্যতম সম্ভাবনাময় রাজনীতিক সংগঠন সিউদাদানোস পার্টিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করেছেন বাংলাদেশী ব্যাবসায়ী স্পেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রাসেল হাওলাদার। স্পেনে বাংলাদেশিদের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশী কমিউনিটিতে দেখা দিয়েছে যথেষ্ট উচ্ছ্বাস। গত ২৪শে নভেম্বর কাতালান সংসদে গিয়ে দলের রিজুনাল ডেপুটি লিডার ও সংসদের ডেপুটি প্রধান সুসানা বেলট্রান গার্সিয়ার সাথে সাক্ষাত করে আনুষ্ঠানিকভাবে রক্ষণশীল সিউদাদানোস পার্টির কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হন।
দলটি স্পেনে অন্যান্য দলের তুলনায় নতুন হলেও রাজধানী শহর মাদ্রিদ ও পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় তাদের রয়েছে শক্ত অবস্থান।
ইতি মধ্যে তারা দেশটির রাজধানী মদ্রিদ সিটি কর্পোরেশন এর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সিউদাদানোস পার্টি থেকে। স্পেনের কাতালান রাজ্যে গত সংসদ নির্বচনে ১৩৬ টি সদস্য পদের মধ্যে ৩৬ টি আসন সিউদাদানোস পার্টির দখলে। তারা এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি অসন প্রাপ্ত দল।
১৮ বছর ধরে স্পেনে বসবাসরত স্পেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং কাসা ই কুইনা গ্র“পের চেয়ারম্যান রাসেল হাওলাদারের বাংলাদেশ ও স্পেনে রয়েছে এর বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ৪৭ বছর বয়সী রাসেল হাওলাদারের ইচ্ছা কমিউনিটির মানুষের সেবা করা। বিগত সময়ে সম্পর্ক ও আস্থার প্রতিদান দিয়ে বার্সেলোনায় বাংলাদেশীদের উন্নয়নে ও বাংলাদেশীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া তিনি সরকারের উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছেন।
এক বক্তব্যে রাসেল হাওলাদার বলেন, স্পেনের মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশী মেধাবীরা প্রবেশ করলেই সম্ভব সাধারণ মানুষের উপকার করা। মূল ধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিরা অনেক পিছিয়ে আছে তাই যোগ্যতা সম্পর্ণ ব্যাক্তিরা এগিয়ে আসলে আগামীতে স্পেনের সংসদে ও দেখা যেতে পারে বাংলাদেশীদের।
বাংলাদেশী অধ্যুষিত মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা সিটিকর্পোরেশন এর অধীনে বেশ কয়েকটি মিউনোসিপল সিটি রয়েছে। আগামীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য পদের জন্য নির্বাচনে একাধিক বাংলাদেশী প্রার্থী ও দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।