কাজিরবাজার ডেস্ক :
কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ আগুন লাগার পর গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসছে নানা অসংগতি। ২২০ মেগওয়াট এর বিশাল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ছিল না কোনো সিসি ক্যামেরা কিংবা নেই কোনো অটো ইভেন্ট রেকর্ডার।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রহমত উল্লাহ মো. দস্তগীর, এনডিসিকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। গত ১৭ নভেম্বর কমিটি গঠন করার পর তদন্ত কমিটি সরেজমিন পরিদর্শনে যায়। তদন্ত কমিটি পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরেছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় ৭ দিনের সময় দিয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব পাওয়ার সেলের পরিচালক মো. আব্দুর রউফ মিয়া বলেছেন, কুমারগাঁও উপকেন্দ্রে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে আগুন কেন লেগেছে তা উদ্ঘাটন স্থানীয়দের সাক্ষীর ওপরই নির্ভর করছে। আমরা উপস্থিত সকলের কাছে শুনেছি কেন কীভাবে আগুন লেগেছে। তারা আমাদের জানিয়েছে হঠাৎ করে তারা ধোঁয়া দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেছে। কিন্তু আশেপাশে তখন ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে। তিনি বলেন, অন্যসব বড় উপকেন্দ্রে অটো ইভেন্ট রেকর্ডার থাকে। কখন কি হচ্ছে না হচ্ছে তা সেখানে সংরক্ষিত থাকে কিন্তু কুমারগাঁও সাবস্টেশনে তাও নেই।
কুমারগাঁও সাবস্টেশনের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ক্ষমতা ২২০ মেগাওয়াট। সিলেট ছাড়াও সুনামগঞ্জ, ছাতক আশে পাশের এলাকায় এখান থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে পিজিসিবি। একই সঙ্গে এখানে দুটি ট্রান্সফরমার দিয়ে সিলেট শহরে বিদ্যুৎ বিতরণ করে পিডিবি। কুমারগাঁও উপকেন্দ্রের জায়গাতে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। জানতে চাইলে পিজিসিবির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব এলাহি চৌধুরী বলেন, উপকেন্দ্রটি অনেক পুরাতন ১৯৬৭ সালে স্থাপিত। প্রথমে ১৩ মেগাওয়াট দিয়ে সঞ্চালন শুরু হলেও এখন ২০০ মেগাওয়াটের উপরে এখান থেকে সঞ্চালন করা হয়। পুরাতন এই উপকেন্দ্রের বাইরেও আমরা সিলেটে আরো দুটি নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ করছি। এই কেন্দ্রটি সংস্কার করা হবে। পুরানো জিনিসে কি কেউ নতুন কিছু স্থাপন করে? তাই এইখানে নতুন করে কিছু বসানো হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর সকাল ১১টা ০২ মিনিটে সিলেট কুমারগাঁও উপকেন্দ্রে আগুন লাগে। আগুনে পিজিসিবি এবং এবং পিডিবির দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়। একই সঙ্গে সুইচ রুম, সার্কিট ব্রেকার পুড়ে গেছে। এতে সিলেট ৩১ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বাইরেও বেশ কয়েকটি উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক উপকেন্দ্রে আগুন লাগাতে পিজিসিবির সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সরকার বারবার এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর নির্দেশনা দিলেও পিজিসিবি সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবে চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।