কাজিরবাজার ডেস্ক :
নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা যাওয়া রাহয়ান উদ্দিন আহমদ হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা যাবে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিশ ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি মূলতবি করেছেন। ১৬ নভেম্বর রিটের ওপর শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখেছেন আদালত।
রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে ও ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী গত মাসে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার বিষয়টি হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে আবেদনকারী আইনজীবী নিজেই অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। তিনি আদালতে মামলার অগ্রগতি জানান।
সূত্র জানায়, গত ১১ অক্টোবর ভোররাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানার আওতাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে পরিবারকে ফোন করে টাকা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। পরিবারের সদস্যরা সকালে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু গণপিটুনিস্থল হিসেবে যে স্থানটির কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা করেন। এরপর পুলিশের তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ ৪জনকে বরখাস্ত ও ৩জনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই মামলায় এ পর্যন্ত ৩ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রায়হান নগরীর আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।