কোয়ারী বন্ধ থাকায় সিলেটের পাথর শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে

8

বাবুল মিয়া। পেশায় একজন পাথর শ্রমিক। কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন ও বারকি নৌকায় কাজ করে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার টাকা আয় ছিল তার। গত কয়েক বছর হলো সিলেটের পাথর কোয়ারী গুলো বন্ধ থাকায় সেই আয় রোজগার নেই তার। শুধু বাবুল মিয়ার নয় এই অবস্থা এখন জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, ছাতক সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ পাথর উত্তোলন, বন্ধ বারকি নৌকা, বন্ধ থাকা লাখো পাথর শ্রমিকের। পাশাপশি পাথর পরিবহন শ্রমিকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। দীর্ঘ দিন ধরে সিলেটের পাথর কোয়ারী গুলো বন্ধ থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ শ্রমিক।
গত ২৮ আগষ্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন সিলেটের বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারীগুলো পরিদর্শনে আসেন। এই সফরে শ্রমিকরা আশায় বুক বাঁধলেও কোন সুখবর নেই শ্রমিকদের জন্য।
পাথর কোয়ারী সংশ্লিষ্টরা জানান, পাথর কোয়ারী গুলো বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের আয় রোজগার একেবারে নেই বললেই চলে। একজন শ্রমিক আগে যেকোন মূল্যে প্রতিদিন দেড় দুই হাজার টাকা আয় করতে পারতেন। স্বাচ্ছন্দে একটি পরিবার চালাতে পেরেছেন। কিন্ত বর্তমানে চরম দুর্দিনে রয়েছেন এ সকল শ্রমিকরা।
এছাড়াও কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানিও রয়েছে বন্ধ। এতে ভারতে ব্যবসায়ীদের কাছে সিলেটের ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা ইনভেষ্ট পড়ে আছে। পাথর কোয়ারী বন্ধ, চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে সিলেটের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে।
পাথর শ্রমিক রেজাউল হক জানান, পাথর কোয়ারী খুলছে খুলছে এমন ভেবে বিকল্প পেশাও তারা বেছে নিতে পারছেন না। তিনি জানান কয়েক লাখ শ্রমিক অসহায় জীবন যাপন করছেন।
ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লাইয়ার্স এসোসিয়েশন এর অর্থ সম্পাদক আলী আমজদ বলেন, শ্রমিকরা তো অসহায় সাথে ব্যবসায়ীরা সব দিক থেকেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। ব্যবসায়ীদের ব্যাংক লোন, কোয়ারীতে রাখা ইনভেষ্ট কিছুই বের হচ্ছে না। সরকার হারাচ্ছে তার রাজস্ব। তিনি জানান, শিল্পনগরী ছাতকের বাণিজ্যিক এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা পর ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা লেবার পেমেন্ট দিতেন। খুশি মনে লেবাররা বাজার করে ঘরে ফিরতেন। সেই ব্যস্ততা আর সুদিন আর ব্যবসায়ী বা শ্রমিকদের মাঝে নেই। এই অবস্থা চলতে থাকলে একটি অঘোষিত হাহাকার নেমে আসবে। (খবর সংবাদদাতার)