কাজিরবাজার ডেস্ক :
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার দণ্ডিত আসামিদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করতে হবে উচ্চ আদালতে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের জন্য রায়সহ মামলার যাবতীয় নথিপত্র আগামী রোববার উচ্চ আদালতে পৌঁছানোর কথা।
দণ্ডিত আসামিরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যাকে বলা হয় ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন) মামলা।
এই ডেথ রেফারেন্স মামলা শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপার বুক বা মামলার বৃত্তান্ত প্রস্তুত করতে হয়। ডেথ রেফারেন্স ও সংক্ষুব্ধ পক্ষের আপিলের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
এ মামলার নথি ডেথ রেফারেন্সের জন্য উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে বরগুনা জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার বলেছেন ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাচ্ছেন না।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নিজ থেকে আপিল না করলেও, ডেথ রেফারেন্স এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে শুনানি ও নিষ্পত্তি হয়ে থাকে।
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে ৪ আসামি খালাস পেয়েছেন। বুধবার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামান। রায়ে বলা হয়েছে, মিন্নিও যে তার স্বামীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন, প্রসিকিউশন তা প্রমাণ করতে পেরেছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামি হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় ও মো. হাসান
গত বছর ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে ভরদুপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে। ওই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই যুবক ধারালো অস্ত্র হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে।
এরপরে বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড,রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর নাম বলেন।
ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মিন্নিকে মামলায় ১ নম্বর সাক্ষী করা হলে মামলা মোড় নেয় অন্যদিকে। ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সেই রাতে তাকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আদালতে হাজির করার পর মিন্নিকে রিমান্ডেও পাঠান আদালত।