জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় ॥ তামাবিল স্থলবন্দর সহ সিলেটের সকল শুল্ক স্টেশনে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব

18
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিমকে উপহার তুলে দিচ্ছেন সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দ।

২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার কাস্টমস্ অফিস সিলেট কার্যালয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম এর সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম সিলেটের ভোলাগঞ্জ, সুতারকান্দি ও তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানী-রপ্তানীকারকগণের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধাসমূহ বিবেচনার আশ্বাস দেন। তাছাড়া পর্যটন নগরী সিলেটকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং সকল প্রবাসীদের বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণের অনুরোধ জানান। সভায় সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, সিলেটের প্রায় সবকটি স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতে থেকে কয়লা, পাথর ও চুনাপাথর আমদানী হয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেবলমাত্র তামাবিল ব্যতীত অন্য কোন শুল্ক স্টেশনে কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ভবন ও গুদাম নেই। আমদানীকারকদের সুযোগ-সুবিধাও অত্যন্ত সীমিত। তারা তামাবিল স্থলবন্দর সহ সিলেটের সকল শুল্ক স্টেশনে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবী জানান। এছাড়াও আমদানীকারকগণ পণ্য আমদানী না হলে আমদানীর পূর্বে প্রদানকৃত অগ্রিম শুল্ক-করাদি সহজে দ্রুত রিফান্ডের ব্যবস্থা করা, গাড়ির চাকার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ওজন নির্ধারণ না করে প্রকৃত ওজন পরিমাপ করে আমদানী শুল্ক আরোপ করা, তামাবিল স্থলবন্দরের ডাম্পিং স্পেসের ভাড়া হ্রাস করা সহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটন খাতের সাথে জড়িত হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সমূহ বিগত ৫ মাস ধরে বন্ধ ছিল। এখাতের ব্যবসায়ীরা নিজেদের লভ্যাংশ খাটিয়ে বিগত দিনগুলোতে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায় করে যাচ্ছে। তাই এ খাতে যারা ইতিপূর্বে ভ্যাট প্রদান করে আসতেছেন তাদের ভ্যাটের বোঝা না বাড়িয়ে, তাদেরকে বারবার হয়রানী বা চাপ সৃষ্টি না করে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি করার অনুরোধ করেন। তাছাড়া ভ্যাট আইন সহজীকরণ, ভ্যাট আদায় সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে সিলেটের ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। অন্যথা সিলেটের মানুষ শিল্পবিমুখ হয়ে যাবে। সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। এখানে নন রেসিডিয়াল বাংলাদেশী রয়েছেন যাদের এনআইডি নেই কিন্তু পার্সপোর্ট রয়েছে। অনেকে দেশি-বিদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ইতিপূর্বে আয়কর সদনপত্র নিয়েছেন এবং এই আয়কর সনদ দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণপত্র গ্রহণ করেছেন কিন্তু ইদানিং ই-টিন গ্রহণের ক্ষেত্রে এই পাসপোর্ট দিয়ে করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ সময় সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং উক্ত মতবিনিময় সভায় মিলিত হওয়ার সুযোগ দানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ সময় সিলেট চেম্বার সিনিয়র সহ সভাপতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের নিকট সিলেটের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন ও এ সম্পর্কিত একটি পত্র সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর নীতি) মোঃ আলমগীর হোসেন, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মোঃ মাসুদ সাদিক, সদস্য (কাস্টমস; নীতি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া, কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের কমিশনার হোসাইন আহমেদ, কর অঞ্চল সিলেটের কর কমিশনার মোঃ সাইফুল হক, কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সফিউর রহমান, যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন পাহলোয়ান, কর অঞ্চল সিলেটের অতিরিক্ত কর কমিশনার মোঃ আবু সাঈদ সোহেল, যুগ্ম কর কমিশনার পংকজ লাল সরকার, সাহেদ আহমদ, উপ কর কমিশনার কাজল সিংহ, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক (রাজস্ব) মোঃ আসলাম উদ্দিন, সিলেট চেম্বারের পরিচালক এমদাদ হোসেন, বাংলাদেশ রেস্তেুারাঁ মালিক সমিতি সিলেট শাখার সভাপতি খালেদ আহমদ, তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সদস্য ও সিলেট চেম্বারের সদস্য জালাল উদ্দিন, সিলেট জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবুল ফজল, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আব্দুল আলীম পাঠান সহ অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, জেলা প্রশাসন, কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট, কর অঞ্চল সিলেটের কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি