সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামসুল আহমেদ এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে বসে সরজমিন তদন্ত করেছেন সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আজিজুর রহমান। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা, প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল আহমেদ, শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ ও শতাধিক অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
ইব্রাহিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামসুল আহমদের বিরুদ্ধে বর্তমান কমিটি ও অভিভাবকদেরকে না জানিয়ে প্রতিভূ লোকদের দিয়ে একতরফাভাবে বেআইনী গোপনীয় ম্যানেজিং কমিটি গঠন, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির রেজ্যুলেশন খাতার ২টি পাতা ছিঁড়ে ফেলা, অভিভাবকদের মধ্যে কোন্দল গ্র“পিং সৃষ্টি ও বিদ্যালয়ের ভূমিদাতাদের জায়গা দানের মূল্যবান দলিল দস্তাবেজসহ পুরনো ফাইলপত্র অফিস দপ্তরীকে দিয়ে খালের পানিতে ফেলে দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগটি দায়ের করেছেন ঐ বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেন রেজা। বুধবার ঐ অভিযোগটির তদন্ত করা হয়। এর আগে গ্রামের সচেতন নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত সেই অভিযোগটির তদন্ত হয়নি। পূর্বের অভিযোগে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দ আত্মসাৎ, সরকারী বই বিক্রি, প্রকাশনীর কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ, তদবীর বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করা হয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
প্রধান শিক্ষক সামসুল আহমেদ এর স্বৈরাচারী কর্মকান্ড বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কারণে গত ১৫ মার্চ ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্যবৃন্দ ও প্রায় ১৩৫ জন সচেতন অভিভাবকরা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দাখিলকৃত অভিযোগে উক্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল আহমেদকে অপসারণের দাবী জানিয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগকারী সভাপতি ও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য ধৈর্য্যের সাথে শ্রবণ করেন। শিক্ষক সামসুল আহমেদ তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি তার অধীনস্থ একজন সহকারী শিক্ষক কে বাইট্যা উন্দুর বলে উত্তেজিত ভাষায় বক্তব্য উপস্থাপন করলে তদন্তস্থলে তার বিরুদ্ধে অভিভাবকরা অশালীন শব্দ বাক্য ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ জানান। পরে উত্তেজিতদের শান্ত করতে প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তদন্ত কাজ চলমান থাকে।
তদন্ত কর্মকর্তা শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেজ্যুলেশন খাতার ২টি পাতা প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগের সত্যতা পান। এছাড়া বিদ্যালয়ের পেছনে খালের পারে পড়ে থাকা পুরনো বইপুত্র ও মূল্যবান কাগজপত্র সরজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে বিদ্যালয়ের দপ্তরী আল-আমিন জানায়, আমি হেড স্যারের নির্দেশেই পুরনো বই ও কাগজপত্র খালে ফেলে দিয়েছি।