শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীনগর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বেগমপুর-জগন্নাথপুর সড়কের স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। সংস্কারের অভাবে হয়ে আছে চলাচলের অনুপোযোগী। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে পানি জমে বড় বড় গর্তগুলো রূপ নিয়েছে মিনি পুকুরে। ফলে যানবাহনসহ পায়ে হেঁটে মানুষ চলাচল করতেও শিকার হচ্ছেন দুর্ভোগের। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগরের বেগমপুর হতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সড়কটি দুই উপজেলার অবহেলিত সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক বাসিন্দারা। শুকনো মৌসুমে কোন মতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সড়কের একাধিক স্থান সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করছেন শিক্ষার্থীরাসহ জনসাধারণ। গাড়ি ভাড়া বাবত গুণছেন অতিরিক্ত টাকা। দেশের গ্রামীণ জনপদগুলোকে শহরের সুযোগ-সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে বর্তমান সরকার যেখানে বদ্ধপরিকর সেখানে অবহেলিত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেহাল দশার দূরীকরণে উপজেলা এলজিইডির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের দায়সারা ভাব জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সড়কটির ওসমানীনগর অংশের ১০ কিলোমিটার এলাকার সংস্কার কাজের জন্য ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৪ শত ৯৮ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এন.আর.জে.বি। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের প্রথম দিকে সংস্কার কাজ শুরুর এক মাসের মধ্যে অজানা কারনে কাজ বন্ধ করে চলে যায় সংশ্লিষ্টরা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের রেখে যাওয়া ভাঙ্গা ছোঁড়া ইট-পাথরে বর্তমানে সড়কটিতে দুর্ভোগের প্রকোভ আরও বেড়ে যেতে দেখা গেছে।
ওসমানীনগরের বিবিয়ানা প্রোপার্টিজের চেয়ারম্যান স্থানীয় বাসিন্দা এসএম মাসুদ আহমদ জানান, ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের রহমতপুর, নুরপুর, লামা গাভুরটিকি, বেড়ারাই, চাতলপার, উত্তর কালানিচর, দক্ষিণ কালনিচর সহ জগন্নাথপুর উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম সড়কটি। বর্তমানে সড়কটির অবস্থা এমন হয়েছে যে রীতিমতো প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে অবহেলিত এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কের একাধিক স্থানে সৃষ্ট গর্তগুলো ডোবায় পরিণত হয়েছে। ডোবা আকৃতির গর্তগুলোকে প্রবাসীসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় একাধিক সময়ে সংস্কার কাজ করালেও কয়েক দিনের মধ্যে গর্তগুলো আবারও পূর্বের আকার ধারণ করছে। জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটির অসম্পন্ন কাজ দ্রুত সম্পাদনের ব্যাপারে সাদীপুর ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী নাজমুল করিম জানান, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। ওই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা পূর্বক দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।