সুনামগঞ্জে বকেয়া বিলের দাবিতে পিআইসিদের মানববন্ধন

10
সুনামগঞ্জে বকেয়া বিলের দাবিতে পিআইসিদের মানববন্ধন।

আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
বকেয়া বিলের দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজন। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রায় শতাধিক পিআইসির সভাপতি সচিবগণ অংশগ্রহণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। এতে বক্তব্য রাখেন আব্বাস উদ্দিন, মোজাহিদ মিয়া ও শাহাব উদ্দিন প্রমুখ। মানববন্ধনে প্রায় ৩ শতাধিক পিআইসি সভাপতি-সচিবগণ অংশগ্রহণ করেন। তারা যেকোন মূল্যে তাদের বকেয়া বিল প্রদানের দাবী জানান।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরপারের কৃষকরা জানান, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৭৪৫টি পিআইসির মাধ্যমে হাওর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এতে প্রতিটি পিআইসিতে ৫ থেকে ৭ জন করে মোট ৪ হাজার লোক দায়িত্ব পালন করে। গত ৩ বছর ধরে লাগাতারভাবে নির্মিত পূর্বের বাঁধের উপর দায়সারাভাবে মাটি কেটে পুরনো বাঁধ মেরামত করে এবার এসব লোকজন হাতিয়ে নেয় সরকারের বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা। গত ৪ বছরে একই লোকরাই পিআইসির সাথে জড়িত থেকে কাজ ভাগিয়ে নেয়। সব জায়গায় দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেট বাঁধের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। এবার শতকরা ৫০ ভাগ কাজ করেই তারা ৭০% এর উপরে ৮৩ কোটি টাকা বিল নেয়। অথচ গত অর্থ বছরে সারা জেলায় পিআইসি ছিল ৫ শর চাইতেও কম। এবার অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় পিআইসি কাজ ভাগিয়ে নিয়ে সরকারের বরাদ্দের টাকা অপচয় করে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। প্রকল্প প্রনেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী এখন সুনামগঞ্জবাসীর প্রাণের দাীিতে পরিণত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সুনামগঞ্জ জেলায় কাবিটা নীতিমালার আওতায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে ৭৪৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১৩২ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হলেও চূড়ান্ত প্রাক্কালনে ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে জেলা বাধ নির্মাণ মনিটরিং কমিটি গড়ে ৭৮ ভাগ কাজ হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১০২ কোটি টাকার মধ্যে ৮০ কোটি টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত প্রাক্বলন অনুযায়ী তাদের বকেয়া বিল এখনও রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রণালয় টাকা ছাড় না দেয়ায় আমরা তাদের বকেয়া বিল প্রদান করতে পারছিনা।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, শতভাগ কাজ না করেই পিআইসিরা ইতিমধ্যে অতিরিক্ত বিল নিয়ে গেছে। প্রত্যেকটি পিআইসি কোটি কোটি টাকার বাঁধ বাণিজ্য করলেও চলমান করোনা দুর্যোগে কোন কৃষককে ছটাক পরিমাণ ত্রাণ দেয়নি। বকেয়া বিলের দাবিতে মানববন্ধনটা একটা লোক দেখানো ফরমায়েসী হুকুম তামিল করা মাত্র। তিনি পিআইসিদের নামে বরাদ্দকৃত বাকী টাকাগুলো অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করত: সরকারী কোষাগারে জমা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।