কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর দু’পারে জব্দকৃত নিলামের পাথর চোরাই পথে পরিবহন টেকাতে কোয়ারী এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খানের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে কোয়ারীর মাঞ্জরি এলাকায় অভিযান চালিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা থানা পুলিশের সহায়তায় ৬৭টি বাল্কহেড জাহাজের ইঞ্জিন বিনষ্ট ও ৬টি পাথর ভাঙ্গার ক্রাশার মেশিন বেল্ট কেটে অনুমান ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়। অভিযানকালে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম সহ ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা, লোভাছড়া বিজিবি ও কানাইঘাট থানা পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লোভাছড়া কোয়ারী এলাকায় মজুদকৃত সকল পাথর পূর্বে জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত সকল পাথর নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। যাতে করে সেখান থেকে জব্দকৃত পাথর কোন ব্যবসায়ী চুরি করে পরিবহন করতে না পারেন এ জন্য প্রশাসনের নজরদারি কোয়ারি এলাকায় রয়েছে। শুক্রবারের অভিযানে পাথর নৌপথে পরিবহনের চেষ্টার ঘটনায় ৬৭টি বাল্কহেড জাহাজের ইঞ্জিন বিনষ্ট ও ৬টি ক্রাশার মেশিনের বেল্ট কেটে ফেলা হয়েছে। এ অভিযান চলবে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, কোয়ারী এলাকায় গত শুকনো মৌসুমে উত্তোলনকৃত জব্দকৃত নিলামে বিক্রির প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর নৌপথে পরিবহন ঠেকাতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে শুক্রবার এ অভিযান চালানো হয়। প্রসজ্ঞত যে, কোয়ারী এলাকায় মজুদকৃত লক্ষ লক্ষ ঘনফুট পাথর অবৈধ আখ্যায়িত করে সম্প্রতি সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উপজেলা ভূমি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাপযোগ করেন। পরে গত ১৯ জুলাই সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মাপযোগ করা প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর জব্দমূলে নিলামে বিক্রি করার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। উক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে কোয়ারীর পাথর ব্যবসায়ীরা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল সহ নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। কিন্তু তারপরও যথারীতি মজুদকৃত পাথর নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ২১ জুলাই নিলামে ৩০ কোটি ৫২ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন মেসার্স সামী এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম। তারপরও ১ম দফার টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে ঐদিনই পুণরায় কানাইঘাটের খেয়াঘাট এলাকায় মজুদকৃত পাথর নিলাম প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিয়ে পুনঃ নিলাম আহ্বান করা হলে গত বৃহস্পতিবার ২৩ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট আলমপুর অফিসে জব্দকৃত পাথর নিলামে উঠলে সর্বোচ্চ দর ১৩ কোটি উঠলে ১ম নিলাম বিজ্ঞপ্তির সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নজরুল ইসলামকে ৩০ কোটি ৫২ হাজার টাকায় জব্দকৃত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর অফিসিয়াল ভাবে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রাতে বুঝিয়ে দেন বলে জানা গেছে। এতে করে গত শুকনো মৌসুমে কোয়ারি থেকে উত্তোলনকৃত কোয়ারী এলাকায় বর্তমানে রাখা মজুদকৃত পাথরের ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানিয়েছেন।