কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিদেশ গমনেচ্ছুদের করোনা পরীক্ষায় ভোগান্তি কমাতে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী ও বণ্যার্ত জেলাসমূহে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছুদের করোনা পরীক্ষার জন্য একটি যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণ না করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের রিপোর্ট আগে বা স্বল্প সময় দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
বিদেশগামী বাংলাদেশিদের নমুনা পরীক্ষার করে করোনার সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশগামীদের নমুনানপরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন একদিকে বিদেশগামীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত তারা থাকতে উদ্বেগে।
‘কেউ কেউ অভিযোগ করছে নমুনা দেওয়ার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে সংক্রমিত হলে তা বিদেশে নমুনা পরীক্ষা ধরা পড়তে পারে। তখন প্রাপ্ত সনদ কাজে আসবে না বা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তাই বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষায় একটি যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করা দরকার। ‘
কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নমুনা গ্রহণ এবং রিপোর্ট প্রদান করে তাদের উদ্বেগ কমানোর জন্য স্বাস্থ্যবিভাগের নজর দেওয়া জরুরি। এর পাশাপাশি নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ অপেক্ষার পরিবর্তে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং বিদেশগামীদের জন্য বুথের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো না করে আগেভাগে তৎপর হওয়া উচিত। রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণ না করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের রিপোর্ট আগে বা স্বল্প সময় দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। আমি বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ সহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমিত বিশ্বের প্রতিটি দেশই চেষ্টা করে যাচ্ছে সংক্রমণ রোধে। প্রতিটি দেশেরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সমৃদ্ধশালী দেশগুলো মহামারী নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশও মহামারী নিয়ন্ত্রণে এবং জনগণেরকে সুরক্ষা দিতে নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রাণান্ত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সীমাবদ্ধতা দূর করে সংক্রমণ রোধ, চিকিৎসা নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ, অসহায় ও কর্মহীনদের সুরক্ষা এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ হত রাখতে নিরলস কাজ করছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ মহামারী থেকে সুরক্ষায় সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার- এ সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে মাস্ট পরিধান সরকার বাধ্যতামূলক করেছে। সামাজিক দূরত্ব তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সচেতনতা দুর্গ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের নিজকে, পরিবার এবং সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, করোনাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যখন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে তখন বিএনপি মানুষের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা উল্টো মানবিক সংকটকে পুঁজি করে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না কেবল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
কাদের বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা অপরাজনীতির অন্ধকারের গিরিখাতে দিকভ্রান্ত পথহারা পথিকের মত প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও চাতুর্যপূর্ণ কথামালা ব্যবহার করে প্রেস ব্রিফিং নির্ভর গলাবাজির রাজনীতি করছে বিএনপি।
গলাবাজির দিন শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশে জণগন এখন অনেক সচেতন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন জণগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল জণগণ জানে বৈশ্বিক মহামারি ও দূর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা ও পরবর্তী অর্থনৈতিক গতিশীলতা পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন করোনার এই সংকটে মানুষের জীবন জীবিকা সচল রাখতে খাদ্যের অভাবে মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী একের পর এক জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক দেশের যে কোন সংকট ও দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকে। আর এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশের এই সংকটে বিএনপি কোন কার্যক্রমে নেই,তারা প্রেস ব্রিফিং করা ছাড়া আর কিছুতেই নেই।
ধানমন্ডিতে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।