স্টাফ রিপোর্টার :
গণমানুষের নেতা সিলেট সিটি করপোরেশনের জননন্দিত সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর আ.লীগের সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি….রাজিউন)। গতকাল সোমবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটে মানিকপীর টিলায় দ্বিতীয় জানাযার নামাজ শেষে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয়। এর আগে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা।
বাদ জোহর ছড়ারপার জামে মসজিদে তার প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প সংখ্যক লোক জানাযার নামাজে অংশগ্রহণ করেন। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এই মসজিদের মোতাওয়াল্লী ছিলেন। প্রথম জানাযার পর দ্বিতীয় জানাজার জন্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মরদেহ নগরীর মানিকপীর টিলার কবরস্থানে নেওয়া হয়।
সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় করোনা ভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ জনসমাগম ছাড়াই দাফন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেখানে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা-ভয় কিছুই কাজে আসেনি। ভয়কে উপেক্ষা করে প্রিয় কামরানের জানাযায় ঢল নামে মানুষের। কামরানকে বলা হতো গণমানুষের নেতা। ‘নগরবাসীর প্রিয় নাম, বদর উদ্দিন কামরান’- এমন শ্লোগানও দিতেন তার অনুসারীরা। সোমবার কামরানের জানাযায় এই শ্লোগানের সত্যতা মিললো আরেকবার। জানাযা শেষে জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কামরানের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গতকাল সোমবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে কামরানের মরদেহ নিয়ে সিলেটের পথে রওনা হন তার পরিবারের সদস্যরা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তার ছড়ারপারস্থ বাসায় এসে লাশ পৌঁছায়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা দুইবারের মেয়র কামরান গত ৫ জুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শরীর আরও খারাপ হলে ৭ জুন এয়ার এ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮ জুন কামরানের শরীরে প্লাজমা থেরাপিও দেওয়া হয়েছিলে। তবে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সোমবার ভোরে মারা যান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি।
এদিকে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও তার অঙ্গসংগঠন, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।