কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিশ্বে কোভিড আক্রান্তে ব্রিটেনকে ছাড়িয়ে চতুর্থ স্থানে পৌঁছে গিয়েছে ভারত। পাশাপাশি সংক্রমিত এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যানে নয়া রেকর্ড গড়েছে দেশ।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, একদিনে দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার হওয়ায়, আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। নতুন করে করোনায় বলি হয়েছেন ৩৯৬ জন। ফলে, প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ৪৯৮ জন। সক্রিয় করোনা রয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৪২। কোভিড থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৯৫ জন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সুস্থতার হার ৪৯.৪৭ শতাংশ। সর্বোচ্চ স্থানে থাকা মহারাষ্ট্রে সংক্রামিতের সংখ্যা ১ লাখ ছুঁইছুঁই। অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাডুতে ৩৮ হাজার ৭১৬, দিল্লিতে ৩৪ হাজার ৬৮৭, গুজরাটে ২২ হাজার ৩২ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। দেশে প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়নি বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।
মৃত্যুতেও শুক্রবার তৈরি হলো নতুন রেকর্ড। বৃহস্পতিবারই কোভিডে মোট মৃত্যুর হিসাবে কানাডাকে পেছনে ফেলেছিল ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৯৬ জনের। এই বৃদ্ধির জেরে করোনা দেশে মোট আট হাজার ৪৯৮ জনের প্রাণ কাড়লো। এর মধ্যে তিন হাজার ৫৯০ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। গুজরাটে করোনা প্রাণ কেড়েছে এক হাজার ৩৮৫ জনের। বিগত কয়েক দিনে দিল্লিতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যা।
এদিকে, লকডাউনের কারণে কর্মীদের বেতন না দিলেও কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বেসরকারি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে বেতন না দিলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। লকডাউনের মধ্যে বেতন সমস্যা নিয়ে কর্মী ও নিয়োগকারীদের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট শ্রম কমিশনকে জমা করতে হবে। ২৯ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের মধ্যেও পুরো বেতন দিতে নির্দেশ জারি করে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রকে এই নির্দেশের আইনি বৈধতা বিষয়ে উত্তর জমা দিতে হবে।
গত মার্চ মাসে একটি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দেয় যে, সব নিয়োগকারীকে লকডাউনের মধ্যেও কর্মীদের সম্পূর্ণ বেতন দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ এবং বিচারপতি এমআর শাহর ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, কোনও সন্দেহ নেই যে শিল্পক্ষেত্র এবং শ্রমিক একে অপরের পরিপূরক। এদের মধ্যে বেতনসংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা মেটানো প্রয়োজন। কেন্দ্রের ২৯ মার্চ জারি করা নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জুলাই মাসে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। এদেশে মহামারি রূপে দেখা দিয়েছে করোনাভাইরাস, এই পরিস্থিতিতে ভারতের দরিদ্রদের অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা পাঠিয়ে সাহায্যের প্রস্তাব দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে তাঁর সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে জানানো হয়েছে যে, মরণ রোগে দেশে মহামারির আকার নেওয়ার পর ভারত সরকার যে অর্থনৈতিক ত্রাণ প্যাকেজের ঘোষণা করেছে তা পাকিস্তানের জিডিপির সমান।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এক অনলাইন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, পাকিস্তান তাদের নিজেদের দেশের জনগণের অ্যাকাউন্টে নগদ দেওয়ার চেয়ে দেশের বাইরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা স্থানান্তরের জন্যে পরিচিত। ইমরান খানের উপদেষ্টাদের এ বিষয়ে আরও জানতে হবে। তারা নিজেদের মানুষকে কখনও টাকা দেয় না। এটা স্পষ্ট যে, ইমরানের খানের উচিত উপদেষ্টাদের পাল্টে আরও তথ্য সংগ্রহ করা।