গবেষণায় তথ্য ॥ লকডাউনের কারণে বেঁচে গেলেন ৩০ লাখ মানুষ

15

কাজিরবাজার ডেস্ক :
লকডাউন লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। লকডাউন লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। লকডাউনের কারণে ইউরোপে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেয়েছে ৩০ লাখ প্রাণ। লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়। ওই গবেষক দল বলেছে, লকডাউন না হলে মৃতের সংখ্যা ব্যাপক হতো। তারা এ কথা বলে হুঁশিয়ার করেছে, কেবলমাত্র অল্পসংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং আমরা এখনো মহামারির শুরুতে রয়েছি।
আরেকটি গবেষণায় একই তথ্য জানিয়ে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী লকডাউন স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছে। যা আগে কখনো হয়নি। ইমপিরিয়াল তাঁদের গবেষণায় ১১ টি ইউরোপীয় দেশ অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে আরোপ করা বিধিনিষেধের প্রভাব নিয়ে মূল্যায়ন করেছে। মে মাস পর্যন্ত তথ্য নিয়েছে তারা। মে পর্যন্ত ইউরোপে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে। গবেষকেরা রোগ মডেলিং তত্ত্ব ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে লকডাউন না দিলে সেখানে কতজন মারা যেত। এই গবেষক দলটিই যুক্তরাজ্যকে লকডাউনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তারা অনুমান করছেন যে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করা এবং মানুষদের বাড়িতে থাকতে বলার মতো ব্যবস্থা না নিলে ৪ মে নাগাদ ৩২ লাখের বেশি মানুষ মারা যেত। তাই বলা যায়, লকডাউন জারির কারণে ইউরোপে ৩১ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে অন্তত ৪ লাখ ৭০ হাজার, ফ্রান্সে ৬ লাখ ৯০ হাজার, ইতালিতে ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষের জীবন বেঁচেছে।
ইমপিরিয়ালের গবেষক সেথ ফ্লাক্সম্যান বলেন, ‘লকডাউন লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। এই মৃত্যু ট্র্যাজেডির মতো হতো।’ তাঁদের গবেষণায় বেশ কিছু বিষয় ধরে নেওয়া হয়, যা গবেষণাকে প্রভাবিত করেছে। তাঁরা ধরে নিয়েছেন, লকডাউন ছাড়া কোভিড হুমকির প্রতিক্রিয়ায় কেউ তাদের আচরণের পরিবর্তন করেনি। তারা এটা হিসাবে নেননি যে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছিল। এই গবেষণায় এটাও আমলে নেওয়া হয়নি যে লকডাউনের কারণে অনেক মানুষের যে শারীরিক ক্ষতি হয়েছে তা ফিরে পেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
গবেষকেরা বলছেন, লকডাউন না হলে মে মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ইউরোপে ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হতো। এই সব দেশের ৪ শতাংশ মানুষ এখন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত। কেবল যুক্তরাজ্যের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনই করোনা–সংক্রমিত থাকতেন।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক গবেষণায় চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউনের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, লকডাউনের কারণে এসব দেশে অন্তত ৫৩ কোটি মানুষের সংক্রমণ এড়ানো গেছে।