কাজিরবাজার ডেস্ক :
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামী ১৫ জুন প্রত্যাহার হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের নিষেধাজ্ঞা। সেদিন থেকে বাংলাদেশে যে কোন এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করতে পারবে। এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে সোমবার সন্ধ্যায় বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক বলেন, এটা ভালো খবর। ১৫ জুন উঠে যাচ্ছে এ নিষেধাজ্ঞা। সেদিন থেকে বাংলাদেশ থেকে যে কোন দেশের ফ্লাইট চলাচলে আর কোন বাধা রইল না। এখন এয়ারলাইন্সগুলো ঠিক করবে কে কখন ফ্লাইট চালাবে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রাতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা জারি করবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ফ্লাইট চালানোর সময় যাত্রী ও বিমান কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে আমূল বদলে যাবে আকাশ পথের রুট। সামজিক দূরত্ব মেনেই যাত্রীদের আসন বণ্টন করা হবে। ফলে যাত্রীদের ভাড়াও বেড়ে যাবে। প্রথম ফ্লাইট চলবে লন্ডন ও কাতার রুটে। তারপর পর্যায়ক্রমে বিশ্বের সব রুটেই ফ্লাইট চলবে। গত ১ জুন থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। এই ক্ষেত্রে নিজেদের সফল মনে করায় বেবিচক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার এ সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে কবে নাগাদ ঢাকা থেকে বিমানের ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হবে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই তো ফ্লাইট চালু করা যায় না। একটা ফ্লাইটের অনেক প্রস্তুতি লাগে। আপনি ইচ্ছে করলেই পারবেন না ড্রিমলাইনার বা ৭৭৭ মডেলের একটি এয়ারক্রাফটের যাত্রী সংগ্রহ করতে। তাছাড়া এই মুহূর্তে শুধু লন্ডন আর চীন ছাড়া আর কোন দেশের এয়ারপোর্ট খোলা নয়। কাজেই অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেবিচক সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে আপাতত হয়তো লন্ডন ছাড়া অন্য কোন দেশে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বিদেশী অনেক এয়ারলাইন্সই ঢাকায় নিয়মিত সিডিউল ফ্লাইট চালানোর জন্য অনুমোদন চেয়েছে। কয়েকটিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ দোহা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তবে কাতারে কোন বাংলাদেশী যাত্রী যেতে পারবেন না। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে থাকায় সেখানে বাংলাদেশীর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ট্রানজিট যাত্রীরা কাতার হয়ে অন্য দেশে যেতে পারবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে লন্ডন ও ম্যানচেস্টার রুটে সরাসরি ফ্লাইট চলতে পারবে। তারপর সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে পর্যায়ক্রমে সব রুটেই সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে। গত আড়াই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অসংখ্য চার্টার্ড ও বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় চলাচল করেছে। একই সঙ্গে কার্গো পণ্য ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী ফ্লাইটগুলোও নিয়মিত বাংলাদেশে চলাচল করছে। মূলত চার্টার্ড ফ্লাইটের চাহিদা থেকেই সিডিউল ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার অপেক্ষায় রয়েছে বিপুলসংখ্যক আটকেপড়া বাংলাদেশী। প্রথমদিকে ফ্লাইটগুলোই তারা ফিরতে পারবে। একইভাবে মধ্যপ্রাচ্যেরও কয়েকটি দেশ থেকে ঘরে অপেক্ষায় রয়েছে হাজার হাজার বাংলাদেশী। তারা এবার সুযোগ পাবেন।