কানাইঘাটে সুরমা ও লোভায় পাহাড়ি ঢল কুওরঘড়িতে সুরমা ডাইকে ভাঙ্গন

18
কানাইঘাট সুরমা ডাইকের কুওরঘড়ি মন্দিরেরঘাটের ভাঙ্গন কবলিত স্থান বাঁশের গড় ও বস্তা ফেলে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে কানাইঘাটে সুরমা ও লোভা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৯০ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারনে গত সোমবার রাত থেকে লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির নদী ভাঙ্গন কবলিত কুওরঘড়ি, বনগৌরিপুর, দক্ষিণ লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামের সুরমা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। বুধবার সকাল ১০টার দিকে কুওরঘড়ি মন্দিরের ঘাট এলাকায় সুরমা ডাইকের কয়েক ফুট রাস্তা পানির স্রোতে একেবারে ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আশপাশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম খান। তিনি সুরমা ডাইকের ভাঙ্গনের বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল হক ও সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। সেখানে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা মেরামতের জন্য বাঁশের গড় ও বালু-মাটির বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেন নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান। লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান জেমস্ লিও ফারগুসন নানকা ও সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুবেল সরকারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে এলাকার অনেকের সহায়তায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাৎক্ষণিক বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে শ্রমিক লাগিয়ে আজ বিকেল পর্যন্ত ভাঙ্গন কবলিত স্থানে গড় ও মাটি-বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সুরমা নদী মারাত্মক ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে, সুরমা ডাইকের বনগৌরিপুর, কুওরঘড়ি, দক্ষিণ লক্ষ্মীপ্রসাদ এলাকা নদীর তীরবর্তী ৩/৪ কিলোমিটার স্থান। প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনে সুরমা ডাইকের রাস্তা বিলীনের পাশাপাশি অনেকের ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর সুরমার ভয়াল থাবায় বিলীন হচ্ছে। এসব এলাকার নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্লক স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন তারা। নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান বলেন, সুরমা ডাইকের কুওরঘড়ি মন্দিরেরঘাট নামক স্থানে ভাঙ্গনের খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই এবং ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কুওরঘড়ি ও লক্ষ্মীপ্রসাদ এলাকার নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারীভাবে চলতি বছরে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। বিভিন্ন এলাকা থেকে জানা গেছে, সুরমা ও লোভা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুরমা ডাইকের তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় জনমনে একধরনের আতংক বিরাজ করছে। এদিকে কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী বন্যার প্রাদুর্ভাব থেকে কানাইঘাটবাসীকে রক্ষা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।