তাহিরপুর বাদাঘাট সড়কের বেহাল দশা, ২৫ বছরেও শেষ হয়নি কাজ

28

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুর বাদাঘাট সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। সড়কে স্থানে স্থানে গর্ত। গর্তের কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গত ২৫ বছর ধরে একই সড়কে কাজ করছে এলজিইডি তাহিরপুর। কিন্তু ৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ করতে পারছে না ২৫ বছরেও। এলজিইডি একাধিকবার সড়কটি যানচলাচলে উপযোগী করার লক্ষ্যে টেন্ডার দিলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। বছরে বছরে শুধু গচ্ছা গেছে সরকারের কোটি কোটি টাকা।
তাহিরপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে তিনটি ইউনিয়ন ও ৩টি শুল্ক বন্দরের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘ ২৫ বছরেও যান চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় এলাকার দেড় লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে। হেমন্তে কোন রকম যোগাযোগ করা গেলেও বর্ষায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী থাকে সড়ক।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে বাদাঘাট বাজার পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে বাদাঘাট, উত্তর বড়দল, দক্ষিণ বড়দল, উত্তরশ্রীপুর সহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিদিন উপজেলা সদরের সাথে একমাত্র সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে প্রথম এলজিইডি তাহিরপুর বাদাঘট সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৯৩ থেকে শুরু করে অদ্যবদি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর পর্যন্ত সড়কে ৬ কিলোমিটার পাকাকরণ করা হয়। সদর ইউনিয়নে বৌলাই নদীর ব্রীজ থেকে বাদাঘাট ইউনিয়নে হোস্নার ঘাট পর্যন্ত সড়কটি নাম মাত্র পাকা রয়েছে। বর্তমানেও চলমান রয়েছে কাজ। ঠিকাদার নাম মাত্র কাজ করছে সড়কের বিভিন্ন স্থানে। কাকাতোয়া সেতুর পূর্ব পাশে নদীর পানি গতিরোধ করতে নদীর পারে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ টিন। হোস্নার ঘাট থেকে পাতারগাঁও ইসলাম পূর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক এখনো রয়েছে কাঁচা। সেই সাথে ঐ কাঁচা সড়কে স্থানে স্থানে রয়েছে গর্ত। বর্ষার শুরুতে এ কাাঁচা সড়কটি সম্পূর্ণ পানিতে নিমজ্জিত থাকে। আর ভোগান্তিতে পরে এ সড়কে যাতায়াত কারী ৪ ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী।
বাদাঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, তাহিরপুর বাদাঘাট ৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২ কিলোমিটর অত্যন্ত খারাপ। এ ২ কিলোমিটার সড়কের জন্য তাহিরপুর সদর যোগাযোগ করতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ২৫ বছর ধরে কাজ করেও কেন ৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না তো আমার বোধগম্য নহে।
বাদাঘাট সরকারী ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ জুনাব আলী বলেন,অফিসিয়াল কাজে আমাদের প্রায়ই সদরে আসতে হয়। সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় আমরা যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই চরম বিপাকে পরি।
তাহিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, সড়কটির পাতারগাঁও নামক স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানির গতির কারণে সড়কটি বছরে বছরে ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে ভেঙ্গে যাওয়া একাধিক স্থানে সড়কে গর্ত দেখা দিয়েছে সেই সাথে সড়কে কাদা জমেছে। আমরা চেষ্টা করছি সড়কটি মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করার জন্য। তবে স্থায়ী ভাবে সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে এ প্রকৌশলী জানান বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো জানেন, আমি কিছু বলতে পারেবা না।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করোনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বাস্তব ভিত্তিক পরিকল্পনা না থাকায় সড়কের কাজ সমাপ্ত করা যাচ্ছে না। বর্তমানে সড়কটি বেহাল দশা বৃষ্টিতে প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আমি চেষ্টা করছি সামান্য ক্রংক্রিট ফেলে সড়কটি মেরামত উপযোগী করা যায় কিনা।