করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সরবরাহ শেকলও বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সময়ে অনেক মানুষের হাতেই কাজ নেই। অনেককেই ঘরে বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত অনেকের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। হাতে কাজ না থাকায় অনেক পরিবারে নেমে এসেছে দুঃসহ অবস্থা। অনেক ছোট ব্যবসায়ীর ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ পরিস্থিতি কত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে প্রয়োজনে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
অর্থাৎ আমরা যে এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তা স্পষ্ট। করোনা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অনিশ্চিত অবস্থায় ছোট ব্যবসায়ীরা। তবে সবার জন্যই সরকারের নেওয়া ব্যবস্থাগুলো অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারে। গত সোমবার এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ছোট ব্যবসায়ীদের ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে। আমাদের মৎস্য চাষি থেকে শুরু করে পোলট্রি, ডেইরি বা যাঁরা কৃষিকাজ ও বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো ব্যবসা করেন তাঁদের প্রত্যেকের কথা চিন্তা করে এবং অন্যান্য দিক খেয়াল রেখেই এই এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে মাত্র ২ শতাংশ সুদে টাকা দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা তাঁদের ব্যবসা চালু রাখতে পারেন। আর যাঁরা ঋণ নিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে দিতে পারেননি তাঁদের এখনই সুদ পরিশোধ করতে হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ নিয়ে তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপলব্ধি ‘এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় কাজ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা এবং মানুষের জীবন ও জীবিকার পথ উন্মুক্ত রাখা।’ তাঁকে এ জন্য ধন্যবাদ জানাতে হয় যে তিনি সঠিক সময়ে সংকট বুঝতে পেরে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন। এর আগে গত ১২ এপ্রিল এক ভিডিও কনফারেন্সে কৃষকের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে কৃষি ঋণের জন্য কৃষককে ৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে, যেখানে এত দিন ৯ শতাংশ পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছিল।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করবে। তবে এই ঋণ যেন সঠিকভাবে ও সঠিক খাতে ব্যবহার হয় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।