ঢাকার দুই মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ॥ মশায় যেন ভোট না খায়

21
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নবনির্বাচিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শপথ বাক্য পাঠ করান।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেঙ্গু রোগ সৃষ্টিকারী এডিস মশা নিধনসহ জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করে নাগরিকদের জন্য সমান সেবা নিশ্চিত করতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে অনেক ঝামেলা চলে আসে। এখন যেমন করোনাভাইরাস; এর আগে এসেছিল ডেঙ্গু। তাই এখন থেকেই এই মশা (এডিস) নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে। মশায় যেন আপনাদের ভোট খেয়ে না ফেলে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। মশা ক্ষুদ্র হলেও অনেক শক্তিশালী এটা মাথায় রাখতে হবে। তাই সঠিকভাবে যেন মশা নিধন হয়।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি মেয়র ও কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। আমি চাই এসব প্রকল্পে যেন দুর্নীতি কিংবা অনিয়ম না হয়। কোথাও কোন রকম দুর্নীতি-অনিয়ম যেন না হয়। যদি এ ধরনের কিছু হয়, তাহলে সে যেই হোক আমি কিন্তু কাউকে ছাড়ব না, এটা হলো বাস্তবতা। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হই। এই সময়ের মধ্যে যেই কাজগুলো করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেই কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাই। সেই ক্ষেত্রে কেউ যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা কোন রকম দুর্নীতি করে কিংবা কোন রকম নয়-ছয় করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেখানে কোন মুখ চাওয়া-চাওয়ি হবে না। এটা আপনারা মনে রেখে দেবেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আরও বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। অভিযান চলতে থাকবে। সেখানে আপনাদের সহযোগিতা চাই। সমাজের এই ক্ষতগুলো থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হবে। এর প্রভাবে আপনাদের সন্তান, ছেলেমেয়ে বা বংশধররাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, নিজে সম্পদশালী হব, ব্র্যান্ড পরব, হাইফাই সোসাইটি দেখব। আর আমার গ্রামের মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে, এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। জাতির পিতাও এটা বিশ্বাস করতেন না, আমিও এটা বিশ্বাস করি না। অর্থাৎ কেউ খাবে কেউ খাবে না, সেটা হবে না। এখানে সকল মানুষের অধিকার আছে। সুন্দরভাবে বাঁচার, উন্নত জীবন পাওয়ার অধিকার আছে। সেজন্যই আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা, সমস্ত অর্থবরাদ্দ। আমরা একেবারে প্রথমে গ্রামের দিকে দৃষ্টি দেই। যে কারেণ প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ যেন নগরের উন্নয়নটা পায়, নগরের ছোঁয়াটা পায়, নাগরিক জীবনের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি। আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিতব্য বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম একই স্থানে দুই সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনের নির্বাচিত ১৭২ কাউন্সিলরকে শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং দুই নির্বাচিত মেয়র মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ওষুধের কার্যকর প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে হলে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। যে কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। কাজেই সেই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেই স্ব-স্ব দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন, সেটাই আমরা চাই। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মনিটরিং জোরদার করার পাশাপাশি সরকারও এটি পর্যবেক্ষণের উদ্যোগ নেবে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনরাত পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়নের প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করি এবং এর জন্য বাজেট দেই। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। সেটা নিবিড়ভাবে আমরা পর্যবেক্ষণ করব। আর আপনারা যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাদের কাছে আমার এই অনুরোধটাই থাকবে- একটা কথা মনে রাখবেন যে, জনগণ আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। জনগণের কাছে আপনারা অঙ্গিকারাবদ্ধ।
মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা যে শপথ নিয়েছেন সেই শপথের কথা মনে রেখে আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে যারা আপনাকে ভোট দিয়েছে এবং যারা দেয়নি অর্থাৎ এলাকাবাসী, সকলের সুযোগ-সুবিধা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে জনগণের ইচ্ছে মতো ভোটাধিকার প্রয়াগের সুযোগ থাকায় জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি সকলের জন্যই নির্বাচিত। এটা মনে রাখতে হবে এবং সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। এটাই রাজনীতির নিয়ম। আর বর্তমান সরকার অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কাজেই সেগুলোর যেন যথাযথ বাস্তবায়ন হয় সেদিকে আপনারা দৃষ্টি দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে তাঁর সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার তথ্য জানিয়ে এর সংক্রমণ রোধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে কিভাবে মুক্ত রাখা যায় সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। একটি হাসপাতাল আমরা আলাদাভাবে করে দিচ্ছি এবং সেখানে ডাক্তার, নার্সসহ যারা সেবা দেবে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া, পোশাক ঠিক করা এবং তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাও করছি। পাশাপাশি সরকারের তরফ থেকে যে নির্দেশনা যাচ্ছে সেসব নির্দেশনাও তিনি সকলকে মেনে চলার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ ও যুব সমাজকে দুর্নীতি ও মাদকের এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে তাদের মেধা, মনন এবং যোগ্যতাকে আমরা দেশের কাজে লাগাতে চাই। আজকে বাংলাদেশের উন্নয়নে সার্বিক গতি এসেছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন বিস্ময় এবং আমি বিদেশে গেলে বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের একটাই প্রশ্ন থাকে যে, এত দ্রুত উন্নয়নটা কি করে করলেন? বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব চলতে থাকার সময় দেশের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করলেও এর প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে তাঁর সরকার পড়তে দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আর আগের মতো কারও কাছে হাত পেতে চলতে হয় না। উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখায় ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে স্বীকৃতি পেয়েছি তা বলবত থাকবে।
২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার জন্য তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই পরিকল্পিতভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি না থাকলেও দেশটা যাতে এগিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থার অংশ হিসেবেই শতবর্ষ মেয়াদী ডেল্টা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ হলেও তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে।
সরকারপ্রধান আরও বলেন, সরকার আসবে, সরকার যাবে। কিন্তু ভবিষ্যতে যেন উন্নয়নের কাজগুলো আবার থমকে না যায়। আগের মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি সে সময়কার সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন এবং দেশের বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা এক ইউনিটও না বাড়িয়ে উল্টো ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট থেকে ৩ হাজার ২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনার তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুত উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার মেগাওয়াট এবং শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুত পাচ্ছে। আর গ্রামে বসেই গ্রামের জনগণ যেন শহরের নাগরিক সুবিধা পেতে পারে তা নিশ্চিতেই তাঁর সরকার তৃণমূল থেকে সকল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারকে ক্ষমতায় আনতে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ায় জনগণের প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা জানান। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই আমি ঘোষণা দিয়েছি- এ সময়ে আমাদের দেশের কেউ আর গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে যত ভূমিহীন ঘরবাড়িহীন মানুষ আছে তাদের সবাইকে যতটুকু পারি, একটা টিনের চালা দিয়েও যদি পারি, ঘরবাড়ি করে দেব। পরিকল্পিত নগরায়ণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যত্রতত্র, যেখানে-সেখানে দালান-কোঠা করা বা ইন্ডাস্ট্রি আমরা করতে দিব না। আমরা সারাদেশে এক শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি, যেখানে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ হবে। দেশী শিল্পোদোক্তারাও সেখানে জমি পাবেন। কাজেই কেউ ফসলি জমি নষ্ট করতে পারবেন না। ১৬ কোটির ওপরে আমাদের যে মানুষ, তাদের সকলের খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য ফসলি জমি আমাদের রক্ষা করতেই হবে। কেননা, এখন আর এই খাদ্যের জন্য আমাদের হাত পাততে হয় না। আমরা এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বস্তিতে বসবাসকারী ছিন্নমূল ঢাকাবাসীর জন্য তাঁর সরকারের আবাসন পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ঢাকা শহরে আমরা ইতোমধ্যেই প্রকল্প হাতে নিয়েছি। বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেব। স্বল্প মূল্যের দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ভিত্তিক ভাড়ায় যেন তারা থাকতে পারে তেমন ব্যাংকিং ব্যবস্থাও তাঁর সরকার করে দেবে। তিনি বলেন, ক্ষমতাবিকেন্দ্রীকরণ করে আমরা একেবারে গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাই এবং স্থানীয় সরকারগুলো আরও শক্তিশালী করতে চাই। যেন নিজের এলাকার প্রয়োজন অনুযায়ী তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের সুযোগ দেয়ায় জনগণের প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন সবাই মিলে বাংলাদেশ, যে দেশটা জাতির পিতা আমাদের স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই বাংলাদেশ। যারা সেদিন জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, তাঁরা (মুক্তিযোদ্ধা) নিজের জীবনের দিকে তাকায়নি। সবকিছু ত্যাগ করে তাঁরা অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তাদের এই অবদান আমরা চিরদিন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি।
সারাদেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা আছে, তাঁরা কে কি অবস্থায় আছে খোঁজ-খবর নেবেন। মুক্তিযোদ্ধারা মানবেতর জীবন-যাপন করবে, মুক্তিযোদ্ধারা দুরবস্থায় থাকবে, দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হবে- সেটা আমি দেখতে চাই না। এরকম যদি কেউ থাকেন অবশ্যই আপনারা আমাকে বলবেন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব অন্তত তাঁদের জীবনটা যেন ভালভাবে চলে। কারণ তাঁদের আত্মতাগেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে আমরা যে যেখানে, যে অবস্থানেই থাকি না কেন এটা তাঁদের (মুক্তিযোদ্ধা) সেই মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই পেয়েছি। এই কথাটা আমাদের ভুললে চলবে না। এই কথাটা আমাদের সবসময় স্মরণ রাখতে হবে। জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন। ইনশাআল্লাহ, আমরা সেই সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলতে পারব।