বেলা ৩টায় দরজা খোলা হয় সিলেট বইমেলার। কিন্তু ২টা থেকেই পাঠক, দর্শনার্থীরা সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশে ঘুরাঘুরি করতে শুরু করেন। বেলা আড়াইটার দিকে বেশ কয়েকজন পাঠক বন্ধুসভার সদস্যদের একটু পর পর এসে জিজ্ঞাস করছেন সবগুলো স্টল কখন খুলবে। তিনটার সময় সবগুলো বইয়ের ষ্টল খোলার সাথে সাথেই মেলায় প্রবেশ করতে থাকেন পাঠক, ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। বই কেনার পাশাপশি শুরু হয় লেখক পাঠকদের গল্প, আড্ডা ও ছবি তোলা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্র“য়ারি) সিলেট বই মেলার ৬ষ্ঠ দিন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। যথারীতি নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সিলেট বন্ধুসভার আয়োজনে চলে মেলা।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বইপ্রেমী, সাংস্কৃতিককর্মী, পাঠক, লেখকদের জমপেশ আড্ডা চলে মেলা প্রাঙ্গণে। গতানুগতিক আড্ডা নয়। এই আড্ডায় থাকে মেলার বিভিন্ন বই ও লেখকদের নিয়ে কথা বার্তা।
এবারের সিলেট বইমেলায় মেলায় ঢাকা ও সিলেটের ২৪টি প্রকাশনা ও বই বিপনন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মেলার বেশিরভাগ প্রকাশকের সাথে কথা বলে জানা যায় বেচাকেনা অনেক ভাল হচ্ছে।
সিলেট বই মেলায় প্রায় প্রতিদিনই আসেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার সম্পাদক আজিজ আহমদ সেলিম। তিনি বলেন, সিলেট বইমেলা হল প্রাণের মেলা, প্রাণের টানে আসি। মেলা শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে মেলায় আসি। কোনো দিন এসেছি অতিথি হয়ে, কোনোদিন এসেছি বই নিয়ে কথা বলতে। আবার কোনোদিন এসেছি পরিবার পরিজন নিয়ে বই কিনতে। এই মেলা আসতে অনেক ভাল লাগে। মেলায় আসলে সকল কবি সাহিত্যিকদের সাথে দেখা হয়। প্রতিদিনই নতুন নতুন বইয়ের সাথে পরিচিত হওয়া যায়।
তার মত সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন মেলায় আসেন। সিলেট ইনজিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী নিশাত এসেছেন তার বান্ধবিকে নিয়ে। তিনি বলেন, বইমেলা আসতে ভাল লাগে। কারণ আমার কাছে মনে হয় এখানে যারা আসেন তার ভাল মনের অধিকারী। আমি গতকাল এসে কিছু বই কিনেছি। আজ আমার বান্ধবিকে কিছু বই উপহার দিলাম।
মেলায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় লেখক শরিফুল হাসানের ‘মুক্তির আলো’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইয়ের প্রকাশক জসিম উদ্দিন। সিলেট বন্ধুসভার সভাপতি তামান্না ইসলামের সঞ্চালনায় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার সম্পাদক আজিজ আহমদ সেলিম ও কবি ও কথা সাহিত্যিক মিনহাজ ফয়সল।
পরে সেলফি প্রতিযোগিতার বিজয়ী জামাল আহমেদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গল্পকার মাহবুবুজ্জামান চৌধুরী।
সিলেট বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি শাহ সিকান্দার শাকিরের সঞ্চালনায় লেখকের সাথে আড্ডা অনুষ্ঠানে ‘পুতুল নাচ’ বইয়ের লেখক কাওসার চৌধুরীর সাথে আড্ডা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন বন্ধু মুনিরা মিম। বিজ্ঞপ্তি