স্টাফ রিপোর্টার :
সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যার দেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা আগামী ৩০ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে শেষ মুহূর্তে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা। বাঁশ খড় কুটো ও মাটি দিয়ে দেবীর অবয়ব তৈরীর পর এখন চলছে প্রতীমায় রং ও অলংকার পরানোর কাজ।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারো মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যার দেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা। এ পূজা উৎসবকে ঘিরে সিলেট নগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, লামাবাজার, শিবগঞ্জসহ বেশ কিছু এলাকায় শ্রীশ্রী সরস্বতীর প্রতিমা নির্মিত হয়। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রতিমা নির্মিত হয় দাড়িয়াপাড়ায়। এই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মৃৎশিল্পীরা তৈরি করছে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের প্রতিমা। এখন চলছে রোদে শুকিয়ে রঙ, শাড়ি ও অলঙ্কার পরানোর কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বিদ্যা দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় সরস্বতী পূজা করে থাকেন। বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি ও মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় এই পূজা। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে ও মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজ-সজ্জার বিশেষ আয়োজন। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এদিকে নগরীর পূজা মন্ডপগুলো সেজে উঠছে নিজের মতো করে, প্রায় প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপে এখন চলছে রং তুলির শেষ আঁচড়। মৃৎশিল্পীরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন।
দাড়িয়াপাড়ার মৃৎ শিল্পী দুলাল পাল জানান, এবার প্রায় দুইমাস ধরে কাজ করে অর্ধশতও বেশী সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছেন তিনি। ইতোমধ্যেই অর্ডার অনুযায়ী ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলোও দুই দিনের মধ্যে শেষ হবে। সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমাগুলো বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।
নগরীর লামাবাজারের তিন মন্দিরে প্রতিমা শিল্পী সাগর পাল জানান, এ বছর প্রতিমা নির্মাণের কাজ বেশি থাকলেও তুলনামূলক জীবনযাত্রার তুলনায় প্রাপ্য মজুরি আশানুরূপ নয়। কারণ প্রতিমা তৈরিতে বিচালি, সুতলি,পাট, মাটি লাগে তার দামও এ বছর বেড়েছে। ফলে প্রতিমার দামও একটু বেশিই পড়ছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা জানান, সিলেট নগরীতে আসন্ন সরস্বতী পূজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বিষয়ক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পূজার সময় নিরবিছন্ন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। পূজার দিন প্রয়োজন মতো পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া পূজায় নগরীতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজ ঠেকাতে মাঠে থাকবে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। তিনি জানান, পূজায় ও পরদিন নগর শোভাযাত্রায় যাতে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে ব্যাপারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।