কাজিরবাজার ডেস্ক :
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে বিএনপির লোক হিসেবে চিহ্নিত করে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। জানিয়েছেন, তিনি কোনো দলের নন, বরং বিবেক দ্বারা পরিচালিত হন।
রবিবার বিকালে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারি দল সবসময় একটা কথা বলে, আপনি বিএনপির পারপাস সার্ভ করার জন্য বসেছেন, আপনার পদত্যাগ করা উচিত- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে কেউ যেকোনো কিছু বলতে পারে, যেকোনো তকমা আমার পেছনে লাগানো যেতে পারে, কিন্তু আমার অতীত ইতিহাস যারা জানেন তারা কখনো বলবেন না যে আমি কোনো নির্দিষ্ট দলের। যে মুহূর্ত থেকে আমি এই চেয়ারে বসেছি সেই মুহূর্ত থেকে আমি কোনো দলের নই। কোনো দলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। কারো সঙ্গে, কোনো মতবাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আমি আমার বিবেক দ্বারা পরিচালিত। এটা তাদের রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে। কিন্তু আমি সেগুলো অতিক্রম করে যেতে চাই।’
ইসি মাহবুব বলেন, ‘আমি আচরণবিধি সম্পর্কে যে চারটি নোট দিয়েছিলাম সেগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। কিন্তু এ সম্পর্কে আমার করণীয় সেটা সময়ই বলে দেবে, এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। নির্বাচন যখন হবে তখন দেখবেন আইনশৃঙ্খলা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে কি না। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।’
প্রচার-প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, আপনারা চুপ কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো চুপ না। আমি স্পষ্টভাবে আচরণবিধি সম্পর্কে অভিমত দিয়েছি। সুতরাং এই প্রশ্নের আলাদা জবাব হয় না। আমার চোখের সামনে কেবল ঢাকাবাসী নয়, আমি এ দেশের নীরব জনগোষ্ঠীর ভাষা যেটা অশ্রুত, সেই অশ্রুত ভাষা শোনার জন্য আমি চেষ্টা করি।’
নিজেদের (কমিশন) মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকলে ভোটের মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কীভাবে থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো এক মেশিনে তৈরি না। আমাদের পাঁচজনের পাঁচ রকম মত হতেই পারে। অনেক বিষয় রয়েছে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সেটাই স্বাভাবিক। কোনো কোনো বিষয়ে ভিন্নমত থাকে। সেটা কারো ওপর চাপিয়ে দিতে পারি না। গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমত থাকতেই পারে। কমিশনের সাধারনত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেখানে সংখ্যালঘিষ্ঠ হিসেবে আমার প্রস্তাব হয়ত গৃহীত হয় না।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অভিযোগ করেন কমিশনের ভেতরেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন আলোচিত এই কমিশনার। তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে নির্বাচন কমিশনে ‘বিএনপির প্রতিনিধি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।