কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারি দলের নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী ক্লিয়ার ম্যাসেজ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জনগণ যাকে চায় তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচনে করবে বলে মনে করেন তিনি।
রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মটর চালক লীগের দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারের সব এজেন্সি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে সরকারের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ যেন কেউ না করে। এই ব্যাপারে ক্লিয়ার ম্যাসেজ সবাইকে তিনি দিয়েছেন।’
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের সংশয়ের বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা ( বিএনপি) বলছে, সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সরকারি সংস্থাকে বাধ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই দল আন্দোলনেও ফেল, নির্বাচনেও ফেল। আন্দোলনে ফেল করলে নির্বাচনেও ফেল করে। বিএনপি ফেলের মধ্যেই আছে, তাদের ভাগ্যে বিজয় কবে আসবে জানি না।’
নেতিবাচক রাজনীতির কারণে মানুষ আর তাদের সঙ্গে নেই দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়ন অর্জন বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতির ওপর সংকটের যে কালো ছায় ফেলেছে, সে থেকে বিএনপির নিস্তারের কোনো উপায় নেই। নির্বাচন নিয়ে আপনাদের যত নালিশ যত অভিযোগ। নির্বাচন আর আন্দোলনে পারেন না, এখন শুধু নালিশ আর নালিশ।’
‘নির্বাচন কমিশনের তাদের একজন স্থায়ী প্রতিনিধি আছেন, আপনাদের এই নালিশের কোনো বাস্তবতা নেই। এই সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বিদেশে যাওয়ার সময় সরকারের সকল সংস্থার প্রধানদের বলেছেন, এই নির্বাচনে আমি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ, কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি চাই না। কোনো এজেন্সি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ যেন না করে। সেই ব্যাপারে ক্লিয়ার ম্যাসেজ দিয়েছেন। কাজেই এখানে সংশয়ের কোনো কারণ নেই।’
‘শেখ হাসিনা বলেছেন নির্বাচনে জনগণ যা চায় তাই হবে। এত কাজ করে জনগণ যদি ভোট না দেয় জোরাজুরি, জবরদস্তি করে জনসমর্থন আদায় করে ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চেয়ে নির্বাচিত হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পার্টিকেও একই ম্যাসেজ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, ঘরে ঘরে যাও, জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। কাজেই আমরা সরকারে পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্থক্ষেপ করবো না। আমরা এটা পরিষ্কার করে আগেও বলেছি এখনো স্পষ্টভাবে বলেছি।’
কাদের বলেন, ‘আসলে নির্বাচনে তাদের অবস্থা কী হবে সেটা তারা (বিএনপি) বুঝে গেছে, তারা বুঝে গেছে এই নির্বাচনের বিজয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সন্ধিহান। বিজয়ী হতে পারবে না বলেই তারা আজকে বিভিন্ন ধরনের নালিশ করার পথ বেছে নিয়েছে। তারা যতই অপপ্রচারই করুক দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই চায়, আওয়ামী লীগকেই চায়।’
বাকশাল নিয়ে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সংকটময় মুহূর্তে জাতির পিতা সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে একটা দল করেছিলেন। যার নাম হচ্ছে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ সংক্ষেপে যাকে বাকশাল বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক যুক্ত হয়েছে, এটাই অনেকের গাত্রদাহের কারণ। মওদুদ সাহেব আপনি কি ভুলে গেছেন, এই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সাহেবের নামটাও ছিল। ভুলে গেছেন, এটা কোনো একদলীয় ব্যবস্থা নয়। এটা ছিল জাতীয় দল কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের শোষিত মানুষের পক্ষের একটা সুশৃঙ্খল জাতীয় দল। এবং এটা ছিল একটা সাময়িক ব্যবস্থা। অপরাধ একটাই কৃষক আর শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্বিন্যাস করেছেন, এটাই তাদের গাত্রদাহ। এটা আগেও ছিল, এখনো আছে।’
বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে আবার রক্তগ্রোত বইবে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অপরাজনীতির হোতা বিএনপি নামক অপশক্তি যেন আর ক্ষমতায় না আসতে না পারে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক, এরাই এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির সূচনা করেছে।’