শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে, মারা গেছে ৫৭ জন

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসার পর বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি মৌসুমে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ জনে। শীতজনিত জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর ইত্যাদি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে প্রথম স্থানে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডায়রিয়া এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। আর এসব রোগে মৃতের হারের বিবেচনায় ডায়রিয়ায় ৫ জন, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগসমূহে ২২ জন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৯ সালের পহেলা নবেম্বর থেকে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার মঙ্গলবার জানান, ২০১৯ সালের পহেলা নবেম্বর থেকে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে শীতজনিত রোগসমূহের মধ্যে ডায়রিয়ায় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯৯ জন, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ৬৫ হাজার ২১৬ জন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় অর্থাৎ জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর ইত্যাদি রোগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপরোক্ত রোগে আক্রান্তরা ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩ জেলা, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা, রংপুর বিভাগের ৮ জেলা, খুলনা বিভাগের ১০ জেলা, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা এবং সিলেট বিভাগের ৬ জেলার বাসিন্দা।
এদিকে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, চলতি বছর শীতকালের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। গত বছর পুরো মৌসুমে তেমন শীত অনুভূত হয়নি। এই বছর ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে অনেক আগেই সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষও এই রোগের প্রতিরোধ সম্পর্কে ধারণা রাখেন। রোগের উপসর্গ সম্পর্কে পূর্ব ধারণা থাকা এবং সামান্য সমস্যা হলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জটিল আকার ধারণ করতে পারে না। আর অন্যান্য অসুস্থতা অর্থাৎ জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর ইত্যাদি রোগে আক্রান্তরাও সচেতনভাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। যথাযথ চিকিৎসা পেলেও এসব রোগে আক্রান্তরাও দ্রুত বিপদমুক্ত থাকতে পারেন। এভাবে শীতজনিত রোগসমূহ ভয়ানক রূপ নিতে পারে না। চিকিৎসকরা আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত সংখ্যা ও মৃতের হার প্রকাশ করায় সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহের মানুষ এসব রোগ সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠতে পারেন। গ্রহণ করতে পারেন পূর্ব প্রস্তুতি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, এবার শীত মৌসুমে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে আশপাশে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থাকায় এবং লোকজন সচেতন হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।