কাজিরবাজার ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে শুরু হয়েছে ক্ষণগণনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষণগণনার মাহেন্দ্রক্ষণ উদ্বোধনের পরই সারাদেশে স্থাপিত ডিজিটাল ঘড়ির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে সারাদেশে উদ্বোধন করা হয়েছে ক্ষণগণনার ঘড়ি। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জমকালো অনুষ্ঠানে ক্ষণগণনা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই উদ্বোধনের পর ডিজিটাল ঘড়ির মাধ্যমে ক্ষণগণনা চলবে ১৭ মার্চের প্রথম প্রহর পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে সারাদেশে ৮৩টি ঘড়ির মাধ্যমে কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে। এছাড়াও এ উপলক্ষে দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের ২৮টি স্পটে, ৫৩ জেলায় ও দুটি উপজেলা মিলিয়ে মোট ৮৩টি ঘড়ি বসানো হয়েছে। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয়ভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের কাউন্টডাউনের উদ্বোধন করেন।
চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করেছে সরকার। ১৭ মার্চ থেকে ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন শুরু হলেও তা ক্ষণগণনা শুরু হয় শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতীয়ভাবে উদ্বোধনের পর। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন এবং দিল্লী হয়ে ১৯৭১ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন থেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনাও শুরু করা হলো।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের ক্ষণগণনা (কাউন্টডাউন) কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার লোগো উন্মোচনের পর দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও পাবলিক স্থানে একইসঙ্গে ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। দেশের ৫৩ জেলা, ২টি উপজেলা, ১২টি সিটি কর্পোরেশনের ২৮টি পয়েন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু এলাকার মধ্যে রয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন, হাতিরঝিল, মেহেরপুরের মুজিবনগর ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ অধিদফতর, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব উদ্যোগে এই ক্ষণগণনার ঘড়ি স্থাপন করেছে। ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় মুজিববর্ষ উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী এর ক্ষণগণনা শুরু হয় ১০ জানুয়ারি থেকে। যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠানটি হবে এ বছরের ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। সারাদেশে স্থাপিত ডিজিটাল ঘড়ির মাধ্যমে আগামী ১৭ মার্চের প্রথম প্রহর পর্যন্ত ক্ষণগণনা করা হবে। সেদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মগ্রহণের শতবর্ষ পূর্ণ হবে। ওই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিশ্বনেতারা উপস্থিত থাকবেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তি ও কর্মজীবন নিয়ে হলোগ্রাফিক উপস্থাপনা ও থিম সং পরিবেশিত হবে। ১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানের পর থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজি।
ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতীকী বিমান অবতরণ, আলোক প্রক্ষেপণে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব তুলে ধরা, ২১বার তোপধ্বনি ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।। ১৯৭২ সালে যেভাবে এদেশের সংগ্রামী জনতা বঙ্গবন্ধুকে বরণ করে নিয়েছিল, প্রতীকীভাবে সেই ক্ষণটিও ফুটিয়ে তোলা হয়, ওড়ানো হয় এক হাজার লাল-সবুজ বেলুন এবং অবমুক্ত করা হয় একশ’টি সাদা পায়রা। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা ১০ হাজার দর্শক এবং আমন্ত্রিত দুই হাজার দেশী-বিদেশী অতিথি বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এ উপলক্ষে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যারা এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি তাদের জন্য প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশে বাণিজ্যমেলায় দুটি বিশাল মনিটরের মাধ্যমে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। হাজার হাজার দর্শক মনিটরের সামনে এই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। এ উপলক্ষে বাণিজ্য মেলাও বন্ধ রাখা হয়।