কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিলেটে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর সকল ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিলেটের ৩ উপজেলার আলেম, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের সাথে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আগামী ২০ জানুয়ারি কানাইঘাটের মুকিগঞ্জ বাজার জামেয়া মাঠে অনুষ্ঠিতব্য তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে আসার কথা ছিল তার। তবে আজাহারির আগমনের সংবাদ নিয়ে ইতোমধ্যে কানাইঘাটে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। মাহফিলের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন উপজেলার আলিয়া ও কওমিপন্থী আলেম-ওলামা এবং দু’পক্ষের সমর্থকরা।
ওই দিন দরবস্তের হাজারী সেনাগ্রাম মাঠে ও ওসমানীনগরসহ ৩টি মাহফিলে তার বয়ান রাখার কথা ছিল। আজহারি সিলেটে আসছেন এমন খবরে গত দুই দিন থেকে কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার মানুষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তাকে প্রতিহতের ডাকও দিয়েছিলেন কানাইঘাট ও জইন্তাপুরের মানুষ।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বিকেল ৩ টায় জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম সিলেটের আলেম সমাজ, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদদের নিয়ে এক বৈঠক করেন।
বৈঠকে মিজানুর রহমান আজহারীর বিভিন্ন বিতর্কিত ওয়াজ নিয়ে আলোচনা করা হয়। হযরত আলী (রা.) মদ খেয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বিবি খাদিজা (রা.) তালাকপ্রাপ্ত, নবী (স.) এর শরীর ৬ প্যাক ছিল, এধরণের বিতর্কিত ওয়াজ করায় আলেম সমাজে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সভায় আলেমগণ বলেন, এরকম ওয়াজ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যেহেতু তার বয়ান বিতর্ক তৈরী করছে, সুতরাং সিলেটে আজহারীর অনুষ্টিতব্য সকল মাহফিলে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে সিলেটে কোন ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে প্রথমে। কেবল প্রশাসন অনুমতি দিলে সিলেটে তিনি ওয়াজ মাহফিলে বয়ান করতে পারবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আলীম উদ্দিন দৌলভপুরি, হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হিলাল আহমদ, হেম দারুল উলুম মাদ্রাশার মুহতামিম মাওলানা জিল্লুর রহমান, দরবস্ত মাদ্রাশার মুহতামিম মাওলানা আবু হানিফ, জৈন্তাপুর লাম্নিগ্রাম মাদ্রাশার মুহতামিম আব্দুল জব্বার, হরিপুর মাদ্রাশার শায়খুল হাদিছ মাওলানা নজরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আলা উদ্দিন, যুগ্ন সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বাবর, উপদপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ, কানাইঘাট উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাকের, কানাইঘাট আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ। এছাড়া জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এবং সংশ্লিষ্ট থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন।